হাশেম আলী /শাহাদাত হোসেন কালিগঞ্জ থেক:
বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ৯ নং সেক্টরের সেনাদল কর্তৃক ১৯৭১ সালের ২০ ٠٠٠ কালিগঞ্জ মুক্ত অঞ্চল ঘোষণা করা হয়। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা যুদ্ধে ১৯৭১ সালের ২০ নভেম্বর মুক্তি পাগল বাংলার দামাল ছেলেরা জীবন বাজী রেখে রক্তের বিনিময়ে’ কালিগঞ্জ উপজেলা কে হানাদার মুক্ত করে। প্রতিবছর এই দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও কালিগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের আয়োজনে পালন করা হয়।
এ উপলক্ষ্যে শুক্রবার( ২০ নভেম্বর) সকাল ৯ টায় দলবদ্ধভাবে বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড ও সাংবাদিকবৃন্দ কালিগঞ্জ শহীদ সরোওয়ারদী পার্কে স্থাপিত স্মৃতিস্তম্ভ পুষ্প মাল্য অর্পণ করে। পরে কালিগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের সামনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা, প্রশাসন, সাংবাদিকবৃন্দ ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের পক্ষ থেকে পৃথক পৃথকভাবে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের সামনে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পতাকা উত্তোলন করা হয় সকাল সাড়ে ৯টায়। কালিগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের তৃতীয় তলায় এক আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে কালিগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাকিমের সভাপতিত্বে ও কালিগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক এর সঞ্চালনায় মুক্ত দিবস উপলক্ষে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কালিগঞ্জ থানার চৌকস অফিসার ইনচার্জ ও জেলার শ্রেষ্ঠ অফিসার ইনচার্জ মোঃ দেলোয়ার হুসেন। সভায় বক্তব্য রাখেন মুক্তযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ মনির আহমেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আবদুর রউফ, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব খান আহসানুল্লাহ, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি ও কুশুলিয়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার শেখ মেহেদী হাসান সুমন, কালিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সুকুমার দাস বাচ্চু, সাংবাদিক সমিতির উপজেলা সভাপতি শেখ আনোয়ার হোসেন প্রমুখ। বক্তারা বলেন জেলার কালিগঞ্জের ইতিহাসে আজ ২০ নভেম্বর একটি স্মরণীয় দিন, যখন সারা দেশে যুদ্ধ চলছে তখন কালিগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধারা কালিগঞ্জ ডাকবাংলার পাশে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সেনা দল কর্তৃক ৯ নম্বর সেক্টর এর উদ্যোগে আনুষ্ঠানিকভাবে কালিগঞ্জ মুক্তাঞ্চল ঘোষণা করেন। সেদিন ছিল ঈদের দিন, উৎসবের দিন। এদিন স্মৃতি ফলক স্থাপন করা হয়। তখন দেশের অন্যান্য স্থানে জেলা ও উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা চলছিল। বক্তারা আরো বলেন নতুন প্রজন্মের কাছে ২০ নভেম্বর মুক্ত অঞ্চলের ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধের ঘটনা জানতে ও জানাতে হবে। সেসময় দামাল ছেলেরা পরিবার পরিজন ফেলে নিজের জীবনকে বাঁজী রেখে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। এবছর দিবসটি পালনে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫০ জন মুক্তিযোদ্ধা কে নিয়ে অনুষ্ঠান করার জন্য বলা হয়। সেকারণে বৃহৎ আকারে করতে না পারায় মুক্তিযোদ্ধারা ও সন্তান কমান্ডের সদস্যবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করেন। আগামীতে ১৬ ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস ও ২৬ শে মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস এবং ২০ শে নভেম্বর হানাদারমুক্ত দিবস আরো বড়ো আকারে উদযাপন করা হবে। বিশেষ করে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিব শতবর্ষ উদযাপন করা হবে অনেক বড় আয়োজনে।