কেশবপুরে গত ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন এস এম আনিছুর রহমান ও কাজী মুস্তাফিজুল ইসলাম মুক্ত। এবার দল থেকে মনোনয়ন না পাওয়ায় বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতীককে হারিয়ে ফের চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করেছেন।
এস এম আনিছুর রহমান উপজেলার ত্রিমোহিনী ইউপি থেকে ও কাজী মুস্তাফিজুল ইসলাম মুক্ত সাগরদাঁড়ি ইউপিতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। এ দুই ইউনিয়নে নৌকার ভরাডুবি হয়েছে। মোট প্রদত্ত ভোটের ৮ ভাগের ১ ভাগ ভোট না পাওয়ায় নৌকা প্রতীকের এই দুই প্রার্থীসহ জামানত হারিয়েছেন ৬ জন। গত ৫ জানুয়ারি পঞ্চম ধাপে কেশবপুর উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে উপজেলার ১ নম্বর ত্রিমোহিনী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী এস এম আনিছুর রহমান আনারস প্রতীক নিয়ে ৩ হাজার ৩৪৫ ভোট পেয়ে দ্বিতীয়বার চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোটরসাইকেল প্রতীকের জাহাঙ্গীর আলম খান সুজন ২ হাজার ৫২৬ ভোট ও ঘোড়া প্রতীকের আব্বাস আলী ২ হাজার ১১২ ভোট পেয়েছেন। নৌকা প্রতীকের অহিদুজ্জামান ১ হাজার ১৭৪ ভোট ও চশমা প্রতীকের শেখ কবির আলমগীর ২৭৩ ভোট পেয়ে জামানত খুইয়েছেন। এ ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ১২ হাজার ১৭৬। নির্বাচনে ইউনিয়নের ৯টি ভোট কেন্দ্রের বৈধ ভোটের সংখ্যা ৯ হাজার ৪৩০। ২০১৬ সালের ২৮ মে অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে এ ইউনিয়ন থেকে এস এম আনিছুর রহমান নৌকা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হন। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। ২ নম্বর সাগরদাঁড়ি ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থী কাজী মুস্তাফিজুল ইসলাম মুক্ত চশমা প্রতীকে ৯ হাজার ৬৮৯ ভোট পেয়ে আবারও চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করেছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী আনারস প্রতীকের শাহাদৎ হোসেন পেয়েছেন ৭ হাজার ৫১৫ ভোট। এছাড়া মোটরসাইকেল প্রতীকের আকরাম খান ১ হাজার ৩১১ ভোট, নৌকা প্রতীক নিয়ে অলিয়ার রহমান ৫০৬ ভোট, হাতপাখা প্রতীকের ইসমাইল হোসেন ২৮৪ ভোট এবং ঘোড়া প্রতীকের আমানাত আলী ১৭১ ভোট পাওয়ায় জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। এ ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ২৪ হাজার ৮৮৩। নির্বাচনে ইউনিয়নের ১২টি ভোট কেন্দ্রের বৈধ ভোটের সংখ্যা ১৯ হাজার ৫৩৪। কাজী মুস্তাফিজুল ইসলাম মুক্ত গত ইউপি নির্বাচনে এ ইউনিয়ন থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে জয়লাভ করেন। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। এদিকে আওয়ামী লীগের দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে ইউপি নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় এ দু’জনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ বিষয়ে ফের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়া ত্রিমোহিনী ইউপির এস এম আনিছুর রহমান বলেন, এ ইউনিয়নে যোগ্য প্রার্থী মনোনয়ন না পাওয়ায় অধিকাংশ আওয়ামী লীগ নেতাসহ সর্বস্তরের জনগণ আমার সঙ্গে ছিল। এ কারণে নির্বাচনে অংশ নিয়ে পুনরায় বিজয়ী হয়েছি। গতবারের ভুলত্রুটি শুধরে নিয়ে আমি জনগণের সেবায় নিয়োজিত থাকবো।সাগরদাঁড়ি ইউপির নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান কাজী মুস্তাফিজুল ইসলাম মুক্ত বলেন, দল থেকে মনোনয়ন না পাওয়ার পর জনগণের চাওয়ায় নির্বাচনে প্রার্থী হতে হয়েছিল। তারা আমাকে ভোট দিয়ে আবারও নির্বাচিত করেছে। গতবারের ন্যায় এবারও এলাকার মানুষের পাশে থেকে কাজ করে যাবো।