৫২’র ভাষা আন্দোলনের শহীদদের কথা স্মরণ করে প্রতিবছরই রাষ্ট্রীয় ভাবে ২১ ফেব্রয়ারিতে শহীদ বেদীতে পুস্পস্তবক অর্পন করা হয়। এদিন দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একযোগে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। আন্তর্জাতিক ভাবেও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে দিনটি পালন করা হয়ে থাকে। কিন্তু এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ দোয়ারাবাজার সরকারি ডিগ্রী কলেজ। উপজেলার বিভিন্ন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার থাকলে এদিক দিয়ে এখনো পিছিয়ে আছে এটি। কলেজটিতে প্রায় ২৮ বছর ধরে নেই কোন শহীদ মিনার। শহীদ মিনার না থাকায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী হয়ে বেড়ে ওঠা শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পরছে ভাষার জন্য জীবন দেয়া শহীদদের সম্মান জানাতে। উপজেলার কেন্দ্রস্থল দোয়ারা সদর ইউনিয়নে দোয়ারাবাজার সরকারি ডিগ্রী কলেজের অবস্থান। ১৯৯৩ সালে কলেজ প্রতিষ্ঠার পর ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্ত হয়।
২০১৮ সালে এই কলেজটিকে সরকারিকরণ করা হয়। বর্তমানে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার প্রায় আট শতাধিক শিক্ষার্থী এখানে পড়াশোনা করছে৷ সরকারি এই কলেজটিতে প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে এখনোব্দি কোনো শহীদ মিনার না থাকায় হতাশ শিক্ষার্থীসহ সচেতন অভিভাবকরা। বছরের পর বছর শহীদ মিনার ছাড়াই বিভিন্ন জাতীয় দিবসসহ ভাষা শহীদ দিবস পালন করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। অথচ এই প্রতিষ্ঠানটিতে শহীদ মিনারের প্রয়োজনীয়তার দিকে যেন নজর নেই কারোরই। কলেজ প্রশাসন জানিয়েছে, নতুন সরকারীকৃত সকল কলেজের শহীদ মিনারের ডিজাইন একরকম হবে বলে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। ২০১৮ সালে ইউএনও’কে এনে স্থান নির্বাচনও করা হয়েছে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত শহীদ মিনার নির্মিত হয়নি। শহীদ মিনার না থাকায় উপজেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে বিভিন্ন জাতীয় দিবস পালন করে আসছে তারা। দোয়ারাবাজার সরকারি ডিগ্রী কলেজ ছাত্রলীগের আহবায়ক ও শিক্ষার্থী দেলোয়ার হোসেন জানান, অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা প্রতি বছরই আনুষ্ঠানিক ভাবে শহীদদের শ্রদ্ধা জানায়। কিন্তু আমাদের কলেজে কোনো শহীদ মিনার না থাকায় আমরা এটি থেকে বঞ্চিত আছি। কলেজে দ্রুত একটি স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণের দাবি জানাই। দোয়ারাবাজার সরকারি ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ একরামুল হক জানান, আমাদের কলেজে দীর্ঘ দিনের চাহিদা একটি দৃষ্টিনন্দন শহীদ মিনার। উপজেলা পরিষদসহ এমপি মহোদয়ের কাছে কলেজে একটি শহীদ মিনার নির্মাণের দাবি জানিয়েছিলাম। তারা আশ্বস্ত করেছেন কিন্তু আজোবধি আমরা কোনো শহীদ মিনার পাইনি। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আজাদুুর রহমান জানান, আমি এখানে নতুন যোগদান করেছি। এবিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। তবে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার থাকা উচিত। এব্যাপারে দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোনিয়া সুলতানার মোবাইল নাম্বারে একাধিক বার কল দেওয়া হলেও কল রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া যায়নি।