বাংলাদেশের ইতিহাসে জাতীয় চার নেতা থাকবেন চীর ভাস্বক হয়ে। তাদের রক্তের ঋণ শোধ করা যাবে না। পৃথিবীর ইতিহাসে জঘন্যতম এই হত্যাকাণ্ড ন্যাক্কারজনক হয়েই থাকবে।’ আজ বুধবার (৩ নভেম্বর) রাজধানীর সেগুন বাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে জাতীয় বিশ^বিদ্যালয় অঙ্গীভূত বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশ গবেষণা ইনস্টিটিউট এর উদ্যোগে আয়োজিত ‘জাতীয় চার নেতা হত্যাকাণ্ড : বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী ষড়যন্ত্র’ শীর্ষক সেমিনার এবং ইনস্টিটিউটে এমফিল লিডিং টু পিএইচডি প্রোগ্রামে ভর্তিকৃত নতুন গবেষকদের গবেষণা পরিচিতি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বক্তারা এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এম.পি. বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু এবং জাতীয় চার নেতা হত্যার মূল্য উদ্দেশ্য ছিল আমাদের দীর্ঘদিনের মূল্যবোধকে দূরে ঠেলে দেশকে আবার পাকিস্তানে ফিরিয়ে নেয়া। এ কারণেই ঘাতকেরা প্রথমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে , এরপর জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করেছে। ঘাতকেরা ভেবেছিল বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরাধিকার এবং তাঁর আদর্শের কেউ বেঁচে থাকলে তাদের উদ্দেশ্য সফল হবে না। ’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘জাতীয় চার নেতা বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে মুক্তিযুদ্ধকে অত্যন্ত সঠিকভাবে পরিচালিত করেছিলেন। একারণেই তাদেরকে হত্যা করা হয়। ’ তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ করে বলেন, বর্তমান সময়েও বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে নিজেদেরকে তৈরি করতে হবে। যেকোন প্রয়োজনে আমাদের মেরুদণ্ডটা সোজা রাখতে হবে। আমরা শুধু আনুষ্ঠানিকতা দিয়ে এই দিবসগুলো পালন করবো না, সত্যিকার অর্থে এর মর্মার্থ আমরা বুকে ধারণ করবো ও নিজেদের তৈরি করবো।’
সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেন, ‘জাতীয় চার নেতা হত্যা কোন সাধারণ ঘটনা নয়, এর পেছনে রয়েছে গভীর ষড়যন্ত্র।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা হত্যার উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশে কোনভাবেই যেন আওয়ামী লীগ মাথা উঁচু করে না দাঁড়াতে পারে। কিন্ত ওই ঘাতকেরা পরাজিত হয়েছে।
সেমিনারে মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সিমিন হোসেন রিমি বলেন, ‘আমাদের স্বাধীনতার ৫০ বছর, আর জেল হত্যাকাণ্ডের ৪৬ বছর। আমাদের শুধু বিচার করলেই হবে না। এখন সময় এসেছে কমিশন গঠন করে হত্যাকাণ্ডের কুশীলবদের বিচার করা। ’
অনুষ্ঠানে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে গবেষণার বিষয়বস্তু ও গবেষকদের পরিচিতি নিয়ে ডকুমেন্টারি উপস্থাপন করেন স্নাতকপূর্ব শিক্ষা বিষয়ক স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মো. নাসির উদ্দিন, সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন খুলনা ব্রজলাল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর শরীফ আতিকুজ্জামান । বিশ^বিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ-আল হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদ সদস্য সৈয়দা রুবিনা মিরা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মুনাজ আহমেদ নূর, বিশ^বিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর আবদুস সালাম হাওলাদার, বিশিষ্ট নাট্য ব্যক্তিত্য রামেন্দু মজুমদার, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক, বিশ^বিদ্যালয়ের ডিনবৃন্দ, বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষবৃন্দ।