
রাজশাহীতে এক শিশুকে একসঙ্গে চার ডোজ টিকা প্রয়োগের ঘটনা ঘটেছে। সুমাইয়া খাতুন নামের ওই শিশুর বয়স মাত্র ১০ মাস। তাকে অতিরিক্ত টিকা দেওয়ার ঘটনায় চার স্বাস্থ্যকর্মীকে তাৎক্ষণিক সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
রোববার দুপুরে মহানগরীর ছোটবনগ্রাম এলাকার শেখ রাসেল শিশু পার্কের পাশে আরবান ক্লিনিকে সরকারের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) আওতায় সুমাইয়া খাতুনকে টিকা দিতে নিয়ে গিয়েছিলেন তাঁর মা। সুমাইয়া নগরীর আসাম কলোনি এলাকার সাদ্দাম হোসেনের মেয়ে। মোবাইলে গল্পের তালে থাকায় স্বাস্থ্যকর্মীরা সুমাইয়াকে চার ডোজ টিকা দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা।
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) স্বাস্থ্য বিভাগের ব্যবস্থাপনায় নগরীতে ইপিআইয়ের এ টিকা প্রয়োগ করা হয়। রাসিকেরই স্বাস্থ্যকর্মীরা টিকা প্রদান করে থাকেন। অতিরিক্ত টিকা প্রয়োগের ঘটনায় যাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে তারা হলেন- রাসিকের স্বাস্থ্য বিভাগের মাঠকর্মী জোসনা, শিল্পী, তহমিনা ও সুপারভাইজার আজাহার আলী।
সুমাইয়ার বাবা সাদ্দাম হোসেন জানান, টিকা দেওয়ার পর তার স্ত্রী শিশু সুমাইয়াকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার পর শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন সাদ্দাম তাঁর স্ত্রীর কাছে জানতে চান শিশুকে কোন টিকা দেওয়া হয়েছে। তাঁর স্ত্রী তখন টিকা কার্ড দেখিয়ে জানান, চার ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। কার্ডে সাদ্দাম দেখেন, এসব টিকা আগেই দেওয়া হয়েছে। আবার একসঙ্গে এত টিকা দেওয়ায় তিনি টিকাকার্ড নিয়ে প্রতিবাদ জানাতে যান। কিন্তু প্রথমে তাঁকে পাত্তাই দেওয়া হয়নি। পরে তিনি ৯৯৯ নম্বরে কল করে পুলিশ ডাকেন। পুলিশ আসার পর ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌহিদুল ইসলাম সুমনও আসেন। তখন স্বাস্থ্যকর্মীরা ‘ভুল করে’ অতিরিক্ত টিকা দেওয়ার বিষয়টি সবার কাছে স্বীকার করেন।
সিটি করপোরেশনের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তৌহিদুল হক সুমন জানান, রাসিকের মেডিক্যাল অফিসার ডা. সরকার বনি শিশুটিকে দেখে এসে জানিয়েছেন তার সমস্যা হবে না। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
রাসিকের প্রধান কর্মকর্তা ডা. এফএএম আঞ্জুমান আরা বেগম জানান, ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাবার পর এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আপাতত চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।