ঝিনুক ডেস্ক-
সাকিব মনে করেন, তাইজুলের নো বলে আসগরের বেঁচে যাওয়াটা ম্যাচের একটি টার্নিং পয়েন্ট।
স্বপ্নের মতো শুরু বুঝি একেই বলে। ম্যাচের প্রথম বলে আফগান ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজের স্ট্যাম্প উড়িয়ে দিলেন সাইফউদ্দীন। বাংলাদেশের দুর্দান্ত বোলিংয়ে পাওয়ার প্লে ঠিকঠাক কাজে লাগাতে পারেনি আফগানিস্তান, ৪০ রানে নেই ৪ উইকেট!
প্রথম ১০ ওভারে আফগানিস্তানের রান ৪ উইকেটে ৬০। এত সুন্দর শুরু করেও ম্যাচটা নিজেদের করে নিতে পারেনি বাংলাদেশ। হেরেছে ২৫ রানে। চাপ সামলে স্লগ ওভারে আফগান ব্যাটসম্যানরা যে ঝড় তুলেছেন, বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা সেটা পারেননি। দারুণ শুরুর পরও কেন অমন ছন্দপতন, কেনই-বা এমন হতাশার হার?
বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান বলছেন, শেষ ১০ ওভারের বাজে বোলিং তাঁদের বেশি ভুগিয়েছে, ‘যেভাবে আমরা শুরু করেছিলাম, শেষ ১০ ওভারে ওরা করেছে ১০৬ রান। এটা অবশ্যই আমাদের জন্য হতাশার। ওখানে ওদের উইকেট নিতে পারিনি। ওই রানটা ওদের করতে দিয়েছি। শেষ ১০ ওভারে তারা ১০-এর ওপরে রান করেছে। যেখানে ৪০ রানে ৪ উইকেট ছিল। এই চাপটা তারা যেভাবে সামলেছে, কৃতিত্ব দিতে হয়। আমাদেরও দোষ আছে অবশ্যই।’
স্বপ্নের মতো শুরু বুঝি একেই বলে। ম্যাচের প্রথম বলে আফগান ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজের স্ট্যাম্প উড়িয়ে দিলেন সাইফউদ্দীন। বাংলাদেশের দুর্দান্ত বোলিংয়ে পাওয়ার প্লে ঠিকঠাক কাজে লাগাতে পারেনি আফগানিস্তান, ৪০ রানে নেই ৪ উইকেট!
নিজেদের ‘দোষ’ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তাইজুল ইসলামের ‘নো’ বলটার কথা বললেন সাকিব। ১৪ ওভার শেষেও আফগানিস্তানের রান ছিল ৪ উইকেটে ৯৩। বিপর্যয় সামলে আফগানিস্তানকে ভালো স্কোর এনে দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন মোহাম্মদ নবী ও আসগর আফগান। ১৫তম ওভারের প্রথম বলেই আসগর বেঁচে যান তাইজুলের ‘নো’ বলের সৌজন্যে। আসগরকে হারিয়ে যেখানে আবারও চাপে পড়ার কথা, সেখানে আফগানিস্তান ওই ওভারে তুলল ১৬ রান।
সাকিবের আফসোস এখানেই, ‘আমরা খুব ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করছিলাম। নো বলটা আমাদের অনেক ভুগিয়েছে। অতিরিক্ত রান (১৮) আমাদের অনেক বেশি ভুগিয়েছে। ১৫-১৬ রান অতিরিক্ত হয়ে গেছে। ওখানেই অনেক পেছনে পড়ে গেছি। তাইজুলের যে ওভারটায় অনেক রান হলো, ওই ওভারে উইকেটটা পড়লে হয়তো ৫-৬ রান হতো, ছন্দটা আমাদের দিকেই থাকত। অথচ সে ওভারে ১৬ রান গেছে। এসবই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। এসব জায়গায় আরও উন্নতি করা দরকার।’
শেষদিকে বোলিংয়ে খারাপ করার পরও আফগানিস্তান এমন কোনো স্কোর গড়েনি যেটা টপকানো অসম্ভ। ১৬৫ রানের লক্ষ্য বাংলাদেশ তাড়া করতে পারেনি বাজে ব্যাটিংয়ে। আফগান স্পিনারদের কেন কুল-কিনারা করতে পারছেন না বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা, সেটির কোনো ব্যাখ্যা নেই সাকিবের কাছে। তবে বাংলাদেশ অধিনায়ক বলছেন, এ ক্ষেত্রে মনস্তাত্ত্বিক ও স্কিল দুটিতেই তাঁরা পিছিয়ে।
টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ আফগানিস্তানের চেয়ে ঢের পিছিয়ে, সেটি স্বীকার করতে দ্বিধা নেই সাকিবের। র্যাঙ্কিংয়ে আফগানরা আছে সাতে, বাংলাদেশ সেখানে দশে। র্যাঙ্কিংয়ে যতই পিছিয়ে থাকুন, সাকিব মনে করেন কাল জয়টা তাঁরা আফগানদের হাতে তুলে দিয়ে এসেছেন, ‘টি-টোয়েন্টিতে ওরা অবশ্যই শক্তিশালী দল। তারা র্যাঙ্কিংয়ে সাতে, আমরা দশে। মাঝে শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ আছে। এই দুই দলের সঙ্গে মাঝে-মাঝে জিতি, মাঝে-মাঝে হারি। আফগানিস্তান সাতে, ওদের হারাতে তাই কষ্টই হয়। এমন পরিস্থিতি দেরাদুনেও ছিল (গত বছর দেরাদুনে আফগানদের কাছে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল বাংলাদেশ), আজও সেটা প্রমাণ হয়ে গেল। এর সঙ্গে বলতে হয় ম্যাচটা (কাল) আমরাই ওদের দিয়ে এসেছি। একটা সময় ম্যাচটা দুহাতে লুফে নেওয়ার সুযোগ ছিল আমাদের, যেটা আমরা পারিনি।’
সাকিবদের সুযোগ অবশ্য শেষ হয়ে যায়নি। সিরিজে আবারও আফগানদের মুখোমুখি হতে হবে তাঁদের। সামনের ম্যাচেও যদি একই ভুল হয়, সাকিবদের হতাশা-আফসোস বাড়বে ছাড়া কমবে না।