ডেস্ক রিপোর্ট : অস্ত্র ও মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনের পৃথক দুই মামলায় ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের মেঝো ছেলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর (বরখাস্ত হওয়া) ইরফান সেলিম ও তার দেহরক্ষী জাহিদুল মোল্লাকে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
রবিবার (০৮ নভেম্বর) পুলিশের করা আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্টেট (সিএমএম) কায়সারুল ইসলামের আদালত এ আদেশ দেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অপরাধ ও তথ্য বিভাগের উপপরিদর্শক (এসআই) শওকত আকবর এ তথ্য জানিয়েছেন।
এদিন সকালে আসামি ইরফান ও তার দেহরক্ষী আসামি জাহিদকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর অস্ত্র ও মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনের পৃথক দুই মামলায় তাদের প্রত্যেককে ৭ দিন করে মোট ১৪ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করে পুলিশ।
এসময় আসামিপক্ষের আইনজীবী ইরফান ও জাহিদের রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন।
উভয়পক্ষের শুনানি নিয়ে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় ইরফান ও জাহিদকে ৩ দিন করে এবং মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় প্রত্যেককে ২ দিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন আদালত।
গত ২৫ অক্টোবর রাতে রাজধানীর ল্যাবএইডের সামনে নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট মো. ওয়াসিফ আহমেদ খানকে মারধরের ঘটনায় পরদিন ২৬ অক্টোবর ধানমন্ডি থানায় ইরফানসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
এ মামলায় ইরফানকে দুই দফায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। এ মামলায় ইরফানের দেহরক্ষী জাহিদ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। একই মামলায় কারাগারে আছেন ইরফানের সহযোগী এ বি সিদ্দিক ওরফে দীপু এবং ইরফানের গাড়িচালক মিজানুর রহমান।
মামলায় ওয়াসিফ আহমেদ খান অভিযোগ করেন, ২৫ অক্টোবর রাতে স্ত্রীকে নিয়ে তিনি মোটরসাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন। ধানমন্ডির ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে পেছন থেকে তার মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয় সংসদ সদস্যের স্টিকারযুক্ত একটি গাড়ি। ওয়াসিফ নিজের পরিচয় দিলেও গাড়ি থেকে নেমে একজন গালিগালাজ করে হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যান। এরপর গাড়িটি কলাবাগান বাসস্ট্যান্ড সিগন্যালে দাঁড়ালে ওয়াসিফ মোটরসাইকেল নিয়ে সেখানে গিয়ে গাড়ির জানালায় টোকা দিয়ে নিজের পরিচয় দেন এবং কথা বলতে চান। গাড়ির ভেতরে থাকা লোকজন কোনও কথা না বলে তাকে উপর্যুপরি মারধর করেন। তিনি জানতে পারেন, তার ও তার স্ত্রীর ওপর হামলাকারী সাদা পাঞ্জাবি পরিহিত ব্যক্তি সাংসদ হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিম। এর বাইরেও এজাহারে তিনি আরও তিনজনের নাম উল্লেখ করেন। তারা হলেন- এ বি সিদ্দিক, জাহিদ ও মিজানুর রহমান। ইতোমধ্যে চার আসামিকেই গ্রেফতার করা হয়েছে।
ঘটনার পর দিন ২৬ অক্টোবর পুরান ঢাকার বড় কাটরায় ইরফানের বাবা সরকারদলীয় সাংসদ হাজী সেলিমের বাসায় অভিযান চালায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র্যাব)। এসময় র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত মাদক রাখার দায়ে ইরফানকে এক বছর কারাদণ্ড ও অবৈধ ওয়াকিটকি রাখার দায়ে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেন। ইরফানের দেহরক্ষী জাহিদকে ওয়াকিটকি বহনের দায়ে ৬ মাসের সাজা দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এছাড়া বাসা থেকে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারের ঘটনায় ইরফান ও জাহিদের বিরুদ্ধে রাজধানীর চকবাজার থানায় চারটি মামলা করে র্যাব।
এদিকে ইরফানের নৈতিক স্খলনজনিক অপরাধ ও অসদাচরণের অভিযোগে ডিএসসিসির ৩০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের পদ থেকে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।