কেশবপুরে ছাত্রীদের বহনকারী বাসে হামলা করে ২০ ছাত্রীসহ ২৫ জনকে আহত করা অন্য বখাটেরা এখনও গ্রেপ্তার হয়নি। গত মঙ্গলবার দুপুরে করোনা ভাইরাসের টিকা নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে উপজেলার পাঁজিয়া এলাকায় বখাটেরা কাটাখালি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর পা থেঁতলে দেওয়াসহ ২০ ছাত্রীকে আহত করে।
ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে কেশবপুর থানায় ১০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৭/৮ জনের নামে মামলা করেন। পুলিশ ঘটনার পরপরই অভিযান চালিয়ে উপজেলার পাঁজিয়া এলাকার যুবক এখলাছ (২৬) ও খায়রুল ইসলামকে (২৫) আটক করেন। অন্য হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে বুধবার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক ও কর্মচারী কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে এক জরুরি সভা করা হয়েছে। টাখালি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বুধবার সকালে আহত ছাত্রীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের খোঁজখবর নেন। পা থেঁতলে যাওয়া ছাত্রী জুঁই বিশ্বাস বাড়িতে চিকিৎসাধীন রয়েছে। চিকিৎসকরা তাকে এক সপ্তাহ বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। তবে ছাত্রীদের মধ্যে এখনও আতঙ্কভাব বিরাজ করছে বলে শিক্ষক মহেন্দ্র নাথ বাইন জানান। আহত ছাত্রী জুঁই বিশ্বাস জানায়, তার পায়ে প্রচন্ড ব্যথা রয়েছে। ডাক্তার তাকে ৭ দিন পর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সে আসার কথা বলেছেন। জুঁই বিশ্বাসের মা নিবেদিতা বিশ্বাস বলেন, তার মেয়েসহ অন্য ছাত্রীদের উপর যারা হামলা করছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। কাটাখালি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মলয় কুমার ব্রহ্ম জানান, মঙ্গলবার রাতে ১০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৭/৮ জনের নামে থানায় মামলা করা হয়েছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক ও কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সভাপতি ও কানাইডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সামাদ বলেন, ছাত্রীদের হামলাকারী গ্রেফতারে বিলম্ব হলে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. আমির আল আহমেদ বলেন, বখাটেদের কর্তৃক পা থেঁতলে যাওয়া ছাত্রী জুঁই বিশ্বাসকে ৭ দিনের বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক তাপস কুমার রায় বলেন, আটক দুই জনকে বুধবার আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। মামলার অন্য আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ ব্যাপারে কেশবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বোরহান উদ্দীন বলেন, ছাত্রীদের উপর হামলাকারী অন্যরা যেখানেই থাকুক তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে। উল্লেখ্য, কেশবপুর উপজেলার কাটাখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা মঙ্গলবার ৭৮ জন ছাত্রীকে করোনা ভাইরাসের টিকা দেওয়ার জন্য বাসে করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। দুপুরে ছাত্রীদের টিকা দেওয়া শেষে বাসে ফেরার পথে কেশবপুর-কলাগাছি সড়কের পাঁজিয়া এলাকায় বখাটেদের সঙ্গে বাস চালকের কথাকাটিকাটি হলে গাড়ি আটকিয়ে দেয়। পরে ওই বখাটেরা বাসে ঢুকে চালকের সঙ্গে খারাপ আচরণ ও মারধর করতে থাকলে শিক্ষকরা বাধা দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বখাটেরা শিক্ষকসহ ছাত্রীদের এলোপাতাড়িভাবে মারপিট শুরু করে ২০ ছাত্রীসহ ২৫ জনকে আহত করে