
অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজল এবং তার সহযোগী মো. ফয়সালের বিরুদ্ধে মারধর ও এসিড নিক্ষেপের অভিযোগে করা মামলায় তদন্তে সত্যতা পাওয়া যায়নি। তদন্ত শেষে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) আদালতে প্রতিবেদন জমা দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে। গত ২৪ নভেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশের উপপরিদর্শক সুলতান মাহমুদ ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জামশেদ আলমের আদালতে এ প্রতিবেদন দাখিল করেন।
এর আগে, গত ৮ জুলাই মারধর ও এসিড নিক্ষেপের অভিযোগে ডিপজল ভক্ত মোছা. রাশিদা আক্তার বাদী হয়ে মামলা করেন।
আদালত মামলার আবেদন গ্রহণ করে সিআইডি পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিদা আক্তার ডিপজলের অন্ধ ভক্ত। বিভিন্ন সময় ডিপজলের সঙ্গে দেখা করতে এফডিসিতে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতেন রাশিদা। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ২ জুন বাদী গাবতলী গরুর হাটে ডিপজল আছে ভেবে তার সঙ্গে দেখা করতে যায়।
তখন গাবতলীতে কোরবানির পশুর হাট চলছিল। বাদী পশুর হাটের হাসিল ঘরের ভেতরে ডিপজল আছেন ভেবে সেখানে প্রবেশ করার চেষ্টা করেন। তখন হাসিল ঘরের ম্যানেজারসহ অন্যান্য কর্মরত লোকজন ডিপজল সেখানে নেই মর্মে জানিয়ে তাকে হাসিল ঘরে প্রবেশে বাধা দেন। রাশিদা চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করলে উৎসুক জনতা এসে ভিড় করতে থাকে।
হাটের লোকজন তাকে চলে যেতে অনুরোধ করে। তবে রাশিদা উত্তেজিত হয়ে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করলে উৎসুক জনতা তাকে মানসিক রোগী ভেবে সেখানে আটক করার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে তিনি নিজের কাছে থাকা একটি বোতলে রক্ষিত তরল কেমিক্যাল জাতীয় পদার্থ নিজের গায়ে ঢেলে দিয়ে আগুন লাগানোর চেষ্টা করেন। অতঃপর দেশের বিভিন্ন জেলা হতে আগত পশু ব্যবসায়ী ও উৎসুক জনতা বাদীর কাছে থাকা ম্যাচ বাক্স/গ্যাস লাইট ছিনিয়ে নেয়। লোকজন হাটে ডিপজল বা তার কোন লোক নেই মর্মে বুঝিয়ে শুনিয়ে তাকে বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করে।
একপর্যায়ে তিনি শান্ত হয়ে গাইবতলী পশুর হাট থেকে বের হয়ে যায়।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ওইদিন রাত ৯টার দিকে বাদী তার যাত্রাবাড়ীস্থ বাসায় ফিরে কাউকে কিছু না বলে শুয়ে পড়েন। রাত ২টার সময় চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেন। চিৎকার চেঁচামেচি শুনে তার স্বামী আব্দুল মজিদ ঘুম থেকে উঠে দেখেন, বাদীর সারা শরীরে ফোসকা পড়ে গেছে। পরের দিন দুপুর ৩টার দিকে আব্দুল মজিদ, প্রতিবেশী রুবি এবং মুক্তা আক্তার বাদীকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে ভর্তি করেন। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে জরুরি বিভাগ থেকে পরদিন তাকে বার্ন ইউনিটে রেফার করা হয়। সেখানে তাকে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় হাসপাতালের ওয়ার্ডে বাংলা সিনেমার একটি গানের সঙ্গে তাল মিলিয়ে টিকটক ভিডিও প্রস্তুত করে তা ইন্টারনেটে আপলোড করেন। পরে বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা শেষে ১১ জুন হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরেন তিনি।
সূত্র কালের কণ্ঠ