এক সময় গ্রাম এলাকায় চোখ যেদিকে যেতো সে দিকেই দেখা যেতো সারি সারি খেজুর গাছ।রাজশাহী র পবা উপজেলায় শীতকালে্ খেজুরের গাছের মাথায় রস সংগ্রহের জন্য গাছিরা টাঙিয়ে রাখতো মাটির হাঁড়ি ও কলস। এমনকি খেজুর গাছের মাথা জুড়ে থোকায় থোকায় হলুদ হয়ে ঝুলে থাকতো খেজুর ফল। ছোট বেলায় ভোর হলেই খেজুর গাছের নিচে ছুটে গিয়ে দলবেঁধে কুড়াতে দেখা যেতো পাকা পাকা মাটিতে পড়ে থাকা খেজুর ফল। কিন্তু দিন দিন কালের বিবর্তনে গ্রাম অঞ্চল থেকে হারিয়ে যাচ্ছে খেজুর গাছের সুস্বাদু রস ও খেজুর ফলের গাছ। ফলে খেজুর গাছ বিলুপ্তির জন্য একদিকে কমেছে খেজুর গুড়ের উৎপাদন। পাশাপাশি হারাচ্ছে প্রাকৃতিক ভারসাম্য। খেজুর গাছ আল্লাহর একটি বড় নিয়ামত। খেজুরের গাছ থেকে শুধু রস, গুড় বা খেজুর ফল পাওয়া যায়না। খেজুর গাছের পাতা দিয়ে শীতল পাটিও তৈরি করা হয়ে থাকে। গ্রাম অঞ্চলের প্রায় বাড়িতে এই খেজুর গাছের পাতা দিয়ে তৈরি করা শীতল পাটি এখনো ব্যবহার করা হয়। তবে আগের চাইতে বর্তমানে তুলনামূলক ভাবে অনেকটাই কমে গেছে,খেজুর গাছের পাতায় তৈরি শীতল পাটির ব্যবহার। বর্তমানে খেজুর গাছের সংখ্যা খুবই কম। যেটুকু দেখা যায় তাও ব্যক্তিগত খেজুর গাছ। যার জন্য মন চাইলেও এখন আর ইচ্ছেমত খেজুর ফল পাওয়া যায়না। হয় না খেজুর গাছের পাতা দিয়ে শীতল পাটি তৈরি করা। বড়গাছি ইউনিয়ন এলাকার মথুরা গ্রামের মোঃ মকবুল হোসেন জানান, আজ থেকে ১০বছর আগে বিপুল পরিমাণ খেজুর গাছ দেখা যেতো। সরকারি রাস্তার পাশে ও ব্যক্তিগত মানুষের খৈলানে ডাঙ্গা জুড়ে সারি সারি খেজুর গাছ ছিলো। গাছে গাছে হলুদ হয়ে ঝুলে থাকতো পাকা পাকা খেজুর ফল। খাওয়ার তেমন কোন লোক ছিলনা। কিন্তু এখন আর তেমন খেজুর গাছ চোখে পড়ে না। তবে প্রাকৃতিক বিশ্লেষকরা বলেছেন একদিকে যেমন খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে তা গুড় উৎপাদন করে অর্থ উপার্জন করা হয়, তেমন খেজুর গাছ থেকে সুস্বাদু ফল ও খেজুর গাছের পাতা দিয়ে তৈরি শীতল পাটিও বিক্রি করে লাভবান হওয়া যায়। অন্যদিকে খেজুর গাছ পরিবেশের ভারসাম্যও রক্ষা করে। তাই বাড়ির আশেপাশে যেখানে ফাঁকা জায়গা পরে রয়েছে সেখানে খেজুর গাছ রোপন করতে হবে। তাহলে একদিকে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা হবে ও খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করে গুড় উৎপাদন বাড়বে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।