কেশবপুরে যৌতুক নিরোধ আইনে এবং নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় মাদ্রাসার শিক্ষক আব্দুল কুদ্দুস এখন কারাগারে থাকায় মাদ্রাসা থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
আদালতে মামলার সুত্রে জানা গেছে উপজেলার প্রতাপপুর গ্রামের মৃত পিয়ার আলী গাজীর ছেলে ও মেহেরপুর দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মোঃ আব্দুল কুদ্দুস গাজীর সাথে উপজেলার বারম্নইহাটি গ্রামের মাষ্টার ওয়াজেদ আলী মোল্যার কন্যা মোছাঃ মুর্শিদা বেগমের মধ্যে মুসলিম শরিয়ত মতে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিয়ে হয় ২০১২ সালের ৩১ অক্টোবর।বিয়ের সময়ে যৌতুক হিসাবে মেয়ের সংসারের যাবাতীয় আসবাবপত্র মালামাল,স্বর্ণালংকারসহ সংসারের যাবতীয় জিনিস দেওয়া হয়। তারপরেও যৌতুক লোভী স্বামী শ্বশুর বাড়ি থেকে আরও ৫ লাখ নগদ টাকা যৌতুক হিসাবে আনতে বলে তার উপর অমানুষিক নির্যাতন করতে থাকে।মুর্শিদার পিতা মেয়ের সুখের কথা চিন্ত্মা করে অনেক কষ্টে নগদ ৩ লাখ টাকা তুলে দেয় জামাই কুদ্দুসের হাতে।তাতেও মেয়ের উপর নির্যাতন বন্ধ হয় না।বাকী ২ লাখ টাকার দাবীতে স্বামী ও শ্বাশুড়ি রাবেয়া বেগম মুর্শিদার উপর অমানুষিক নির্যাতন করতে থাকে। এদিকে যৌতুক লোভী লম্পট স্বামী আব্দুল কুদ্দুস তার মাদ্রাসার তৎকালীন ১০ম শ্রেণির এক ছাত্রীর সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে।ছাত্রীকে বিয়ে করেছে দাবী করে কেশবপুর শহরে একটি ভাড়া বাড়িতে রেখে সেখানে গোপনে আসা-যাওয়া করতে থাকত আব্দুল কুদ্দুস।মুর্শিদার উপর অমানুষিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে পিতার বাড়িতে চলে যায়।এরপর কুদ্দুস তার সাথে সকল প্রকার যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।মুর্শিদা স্বামীর বিরম্নদ্ধে যৌতুক, নারী নির্যাতন এবং বিনা অনুমতিতে দ্বিতীয় বিয়ের অভিযোগে গত ১৬ জানুয়ারি কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। উক্ত অভিযোগে ভিত্তিতে ২৮ ফেব্রম্নয়ারি উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রূপালী রাণী তার দপ্তরে একটি শুনানির দিন ধার্য করেন। ওই দিন কুদ্দুস তার বিরম্নদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ স্বীকার করে বলেন আপনারা আমার বিরম্নদ্ধে যা করার করতে পারেন। তার এই উদ্ধাতপূর্ণ আচারণে ক্ষুব্ধ হয়ে নির্বাহী কর্মকর্তা কুদ্দুসকে মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ করে পত্র প্রেরণ করলে তাকে মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কার করা হয়। এদিকে নির্যাতনের স্বীকার মুর্শিদা বেগম যশোর বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এ এবং বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কেশবপুর আদালতে যৌতুক নিরোধ আইনের ৩ ধারায় পৃথক পৃথক ভাবে দুটি মামলা দায়ের করেন। যার নং: সি আর ৫৬/২২, তারিখ ১৬/০১/২০২২ ও সি আর ২০/২২ তারিখ ১৮/০১/২০২২। উক্ত মামলায় বিজ্ঞ আদালত আসামীর বিরম্নদ্ধে গ্রেফতারী আদেশ জারী করেন এবং কেশবপুর থানা পুলিশ গত ০৭/০৪/২০২২ তারিখে আসামী আব্দুল কুদ্দুস গাজীকে আটক করে তাকে যশোর জেল হাজতে প্রেরণ করেন।