ঝিনুক টিভি ডেস্ক-
মানবতা বিরোধী অপরাধ মামলায় ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হলিধানী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি আব্দুর রশিদ মিয়া ও কোলা গ্রামের সাহেব আলী মালিতাকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সোমবার দুপুরে সদর উপজেলার ডাকবাংলা ত্রিমনী এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার মোঃ হাসানুজ্জামান গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আব্দুর রশিদ মিয়া ও সাহেব আলী মালিতার বিরুদ্ধে অভিযোগের ভিক্তিতে মানবতা বিরোধী অপরাধে তদন্ত চলছিল। তদন্তে অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় তাদের আন্তর্জাতিক মানবতা বিরোধী অপরাধ প্রসিকিউশন তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে । এরই ধারাবাহিকতায় পরবর্তীতে আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। গ্রেফতারী পরোয়ানার ভিক্তিতে ডাকবাংলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ তাদেরকে গ্রেফতার করেছে বলে তিনি জানান। তিনি আরো জানান গ্রেফতারকৃতদের সংশ্লিষ্ট আদালতে সোপর্দ করা হবে।
এ বিষয়ে নির্যাতিত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান মুজিবর মন্ডলের পুত্র হলিধানি এলাকার কোলা গ্রামের মোঃ মোশাররফ হোসেন জানান ১৯৭১ সালের ১৭ জুন আনুমানিক সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে এলাকার রাজাকার কমান্ডার আব্দুর রশিদ এর নেতৃত্বে রাজাকার সাহেব আলী মালিতা ও আসমত আলীসহ রাজাকার বাহিনী তার দুই চাচা মুক্তিযোদ্ধা আছির উদ্দিন ও মহিউদ্দিনকে ধরতে আসে। রাজাকারা মুক্তিযোদ্ধা তার দুই চাচাকে না পেয়ে রাজাকার বাহিনী তার চাচা আজিবর মন্ডলকে ধরে। এ সময় তার অন্য দুই ভাই আনছার ও হবিবর বড় ভাই আজিবরের পাশে দাড়ায়। রাজাকাররা তিন ভাইকেই বেঁেধ ঝিনাইদহে নিয়ে যায়। তিনি আরো জানান তারা জানতে পারে রাজাকাররা তার তিন চাচাকে ঝিনাইদহ শহরের পুর্ব এলাকায় গুলি করে হত্যা করে লাশ গুম করে দেয়। এর পরদিন রাজাকার বাহিনী পুনঃরায় তাদের বাড়িতে আসে এবং পিতা মুজিবর ও অপর দুই চাচা মকবুল ও হবিবরের বাড়ি লুটপাট করে আগুন ধরিয়ে দেয়।
পরবর্তিতে রাজাকারদের হাতে নিহত আজিবর মন্ডলের পুত্র আনোয়ার হোসেন আন্তর্জাতিক মানবতা বিরোধী অপরাধ প্রসিকিউশন-এ জড়িত রাজাকারদের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালে একটি অভিযোগ দাখিল করে। তিনি আরো জানান রশিদ পরে রাজাকার আব্দুর রশিদ গম চুরি মামলা থেকে বাঁচতে কিছু জামায়াত সমর্থকদের নিয়ে ১৯৯৭ সালে আ’লীগে যোগদান করে । এরপর ১৯৯৯ সালে ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। এর আগে ১৯৮৮ সালে আব্দুর জামায়াতের সমর্থনে হলিধানী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। পরবর্তিতে তিনি গত ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতিক নিয়ে আবারো ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। অবশেষে দীর্ঘ তদন্ত শেষে তারা মানবতা বিরোধী অপরাধ প্রমানিত হওয়ার পর পুলিশ সোমবার তাদের গ্রেফতার করে।