দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য কাজী শহিদুল ইসলাম পাপুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম এমপি ও তার মেয়ে ওয়াইফা ইসলামকে আগামী ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ সময় বেঁধে দেন।
এর আগে পাপুলের স্ত্রী-কন্যাকে আত্মসমর্পণ করতে ১০ দিনের সময় দেয়া হলেও নিম্ন আদালতের অবকাশকালীন ছুটির কারণে তারা তা করতে পারেননি। ফলে সংশোধিত আদেশ নিতে হাইকোর্টে আসেন তারা। পরে আদালত আত্মসমর্পণের জন্য ২৮ ডিসেম্বর সময় বেঁধে দেন।
এদিন আদালতে বিবাদী পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
গেল ১১ নভেম্বর সাংসদ পাপুল, তার স্ত্রী এমপি সেলিনা ইসলাম, শ্যালিকা জেসমিন প্রধান ও মেয়ে ওয়াফা ইসলামের বিরুদ্ধে ২ কোটি ৩১ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ ও ১৪৮ কোটি টাকার লন্ডারিংয়ের অভিযোগ এনে মামলা করে দুদক।
দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ সংস্থাটির অনুসন্ধান কর্মকর্তা উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আসামিদের বিরুদ্ধে ২ কোটি ৩১ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ ও ১৪৮ কোটি টাকার লন্ডারিংয়ের অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের আড়ালে জেসমিন প্রধানের ৫টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ২০১২ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ১৪৮ কোটি টাকা লন্ডারিং হয়। অথচ মাত্র ২৩ বছর বয়সী জেসমিনের নিজের আয়ের কোনও উৎস নেই।
এছাড়া এফডিআর হিসাবের ২ কোটি ৩১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৮ টাকার কোনও উৎস শ্যালিকা জেসমিন দাখিল করতে পারেননি। যে কারণে অবৈধ সম্পদের অভিযোগে পাপুল, তার স্ত্রী সেলিনা, শ্যালিকা জেসমিন ও মেয়ে ওয়াফা ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুদক।
জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে তা ভোগ দখলে রাখার অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণ হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারায় অভিযোগ এবং প্রায় ১৪৮ কোটি টাকা হস্তান্তর, রূপান্তর ও স্থানান্তরের মাধ্যমে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ২০১২ এর ৪(২) এবং ৪(৩) ধারায় এজাহারে অভিযোগ আনা হয়।
অর্থ ও মানবপাচারের অভিযোগে বর্তমানে কুয়েতের কারাগারে আছেন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পাপুল।
চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি পাপুলের বিরুদ্ধে মানবপাচারসহ জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত শত শত কোটি টাকার সম্পদ অর্জন করে হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক।