সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ঐতিহাসিক যশোরশ্বরী কালিমাতা মন্দিরে পূজা অর্চনা সুসম্পন্ন করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ঈশ্বরীপুরের তিনটি হেলিপ্যাডে তিনটি হেলিকপ্টারের একটিতে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে শনিবার সকাল ৯টা ৫৮ মিনিটে খদ্দরের পাঞ্জাবী, সাদা পাজামা ও গলায় উত্তরীয় পরিহীত ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিরাপত্তারক্ষীদের সাথে নিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে ঈশ্বরীপুর নামেন। মন্দির প্রাঙ্গনে ঢাক ঢোল, শঙ্খধ্বনি ও উলুধ্বনি দিয়ে সম্পুর্ণ সনাতনী রীতিতে স্বাগত জানানো হয় বহুল কাঙ্খিত ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীকে।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে লালপাড়ের সাদা শাড়ি ও লাল ব্লাউজ পরে স্থানীয় ৩৮ জন রমণী নরেন্দ্র মোদীকে অভ্যর্থনা জ্ঞাপন করেন। এরপর তিনি শ্রদ্ধাবনতঃ চিত্তে যশোরেশ্বরী কালিমাতা মন্দিরে প্রবেশ করেন এবং কালিমাতার মাথায় মুকুট পরান। পুরোহিতের পরিচালনায় সতীদেবীকে মূল্যবান বস্ত্র সহ নানাধরনের শয্যায় সুসজ্জিত করেন তিনি। পরে দেবীর গলায় জবা ফুলের মালা পরিয়ে আরাধনা শুরু করেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী । প্রার্থনায় অংশ নিয়ে তিনি দেবী সতীর প্রতি শ্রদ্ধা ভক্তি ভালবাসার প্রকাশ ঘটান। দেবীর পদতলে মাথানত করে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তিনি । যশোরেশ্বরী কালী মন্দিরের চারিধার তিনি সনাতনী রীতিতে দু, হাত জোড় করে প্রদক্ষিণ করেন এবং শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
মন্দিরের পুরোহিত দিলীপ মুখার্জী ২০ মিনিট ৫৬ সেকেন্ডের প্রার্থনা পর্বটি পরিচালনা করেন।
নিরাপত্তায় নিয়োজিত ভারতীয় ও বাংলাদেশের বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা চোখের পলক না ফেলে প্রহরা দেন এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন।
নরেন্দ্র মোদীর সাথে উপস্থিত ছিলেন, ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী শুভ্রামনিয়াম জয় শংকর, হাই কমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী।
বাংলাদেশের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কৃষি মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক,সাতক্ষীরা ৪ আসনের সংসদ সদস্য এস এম জগলুল হায়দার, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল,সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান, যশোরেশ্বরী কালী মন্দিরের সেবায়েত নাট্যকার জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়,ভারত ও বাংলাদেশের প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা ও আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ।
ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত মন্দিরের পুরোহিতকে দুই হাজার ভারতীয় রুপি উপহার দেন।
পরে ভারত থেকে আসা ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তিনি ঘোষণা দেন, সাতক্ষীরার শ্যামনগর অঞ্চল সুন্দরবন সংলগ্ন দুর্যোগ প্রবণ এলাকা। বাংলাদেশ ভারতের ঐতিহাসিক বন্ধুত্বের নিদর্শন স্বরূপ তিনি একটি আধুনিক সাইক্লোন শেল্টার গড়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।