ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের কারণে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে কয়রায় ২দিন ধরে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এতে জমিতে থাকা পাকা ধান নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকেরা। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে ধানের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছে কৃষক ও কৃষি অধিদপ্তর।
শনিবার দুপুর থেকেই কয়রায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। গতকাল রোববার দুপুর পর্যন্ত থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে। তবে দুপুরের পর থেকে একটানা বৃষ্টি হয়। আজ সোমবার সকাল থেকেই আবারো থেমে থেমে বৃষ্টি শুরু হয়ে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত অব্যাহত আছে বলে জানা গেছে।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, জাওয়াদের কারণে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে ঘন মেঘপুঞ্জ সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। তবে আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে আবহাওয়ার উন্নতি হতে পারে। গতকাল সকাল ছয়টা থেকে আজ সোমবার সকাল নয়টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় খুলনায় বৃষ্টি হয়েছে ২৫ মিলিমিটার। এদিকে আজ সকাল ছয়টা থেকে নয়টা পর্যন্ত ১৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
৬নং কয়রা গ্রামের কৃষক পুলিন মণ্ডল এবার আট বিঘা জমিতে আমন ধানের চাষ করেছেন। তিনি বলেন, এবার বর্ষা মৌসুমে অতি বৃষ্টির কারণে ২/৩ বার বীজতলা ডুবে নষ্ট হলে দেরীতে ধান রোপন করলেও আমনের ফলন ভালো হয়েছিল। কিন্তু গত দুই দিনের বৃষ্টি দেখে সব কৃষকের হাসি মলিন হতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে তার ৫০ ভাগ ধান ক্ষতির মুখে পড়েছে বলে জানান তিনি। বৃষ্টির সঙ্গে বাতাসের কারণে তার ক্ষেতের সব ধানগাছ হেলে পড়েছে।
একই গ্রামের গোষ্ঠ বিহারী রায় বলেন, আমন মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টির কারণে ধান লাগাতে দেরি হয়েছিল। তবে ধান তুলনামূলক অনেক ভালো হয়েছিল। ধান কাটার সময়ে আবার বৃষ্টি শুরু হলো। এক তৃতীয়াংশ জমির ধান কেটে মাঠে ফেলানো আছে। হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হওয়ায় ধান না তুলতে পারায় মাঠে পানি জমে ডুবে গেছে। বাকি ধানগাছ হেলে পড়েছে। এখন কতটুকু ধান ঘরে তুলতে পারবেন সেটি নিয়ে তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেন।
কয়রা উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, এবছর ১৩ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে ধান চাষের লক্ষমাত্রা থাকলেও ১৪ হাজার ৭২০ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়। তবে অতিবৃষ্টির কারণে ধান রোপন দেরী হওয়ায় ৯৫ শতাংশ জমির ফলন ভালো হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ১৩ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়েছে। বর্তমানে প্রায় ৮০ শতাংশ ধান পেকে গেছে। বর্তমানে কর্তনকৃত ধান হেক্টর প্রতি ৪.৮ টান হিসেবে ফলন হয়েছে। তবে অসময়ের এই বৃষ্টি সকলকে চিন্তিত করে তুলেছে। বৃষ্টির কারণে ধানের শিষকাটা পোকার আক্রমণ শুরু হয়েছে। এছাড়া জমিতে পানি জমে থাকায় পরবর্তী ফসল উৎপাদনও বাধাগ্রস্ত হবে।
কয়রা খুলনা প্রতিনিধি
তারিখঃ- ০৬/১২/২১ ইং।