সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওসমান হাদীর প্রয়াণ: রাজপথের এক প্রতিবাদী কণ্ঠের চিরবিদায়!
দীর্ঘ লড়াইয়ের অবসান ঘটিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন সশস্ত্র হামলায় মাথায় গুলিবিদ্ধ হইয়া গুরুতর আহত ওসমান হাদী। আজ সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর মৃত্যুর সংবাদে রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
প্রতিবাদী কণ্ঠের নীরবতা:- ওসমান হাদী কেবল একজন ব্যক্তি ছিলেন না, তিনি ছিলেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে এক আপসহীন ও সাহসী কণ্ঠস্বর। রাজপথের প্রতিটি আন্দোলনে তাঁর সরব উপস্থিতি সাধারণ মানুষের কাছে তাঁকে অনুপ্রেরণার মূর্ত প্রতীক হিসেবে গড়ে তুলেছিল। তাঁর এই অকাল মৃত্যুতে সমাজ এক বলিষ্ঠ অভিভাবককে হারাল, আর রাজপথ হারাল তার অন্যতম লড়াকু সৈনিককে।
ঘটনার প্রেক্ষাপট্:- উল্লেখ্য, গত ১২-ডিসেম্বর/২৫ ইং তারিখে এক অতর্কিত ও নৃশংস সশস্ত্র হামলায় ওসমান হাদী গুরুতর আহত হন। হামলাকারীরা প্রকাশ্য দিবালোকে তাঁকে লক্ষ্য করে প্রাণঘাতী আঘাত চালায়। দেশে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে দ্রুত সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। সেখানে দীর্ঘ সময় আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে থাকার পর আজ চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি:- ওসমান হাদীর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় বইছে। নাগরিক সমাজ ও তাঁর সহযোদ্ধারা এই হত্যাকাণ্ডকে ‘সুপরিকল্পিত এবং কাপুরুষোচিত’ বলে অভিহিত করেছেন।
বিক্ষুব্ধ জনতা ও পরিবারের পক্ষ থেকে প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানানো হয়েছে:
* দ্রুত শনাক্তকরণ:- হামলায় সরাসরি জড়িত এবং নেপথ্যের পরিকল্পনাকারীদের অবিলম্বে চিহ্নিত করতে হবে।
* গ্রেপ্তার ও বিচার:- পলাতক আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে একটি বিশেষ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
* নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ:- ভবিষ্যতে যেন আর কোনো প্রতিবাদী কণ্ঠকে এভাবে স্তব্ধ হতে না হয়, তার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
শোকাবাহ:- ওসমান হাদীর মৃত্যুতে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। তাঁর মরদেহ দেশে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনায় আগামীকাল বাদ আসর বিভিন্ন স্থানে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
একটি সুন্দর সমাজ বিনির্মাণে এবং সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ে ওসমান হাদীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। তাঁর এই অপূরণীয় ক্ষতি কোনোভাবেই পূরণ হওয়ার নয়।