ডেস্ক রিপোর্টঃ নানামুখি সংকটের মুখে প্রায় ১২ হাজার বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাচ্ছে লেবানন সরকার। দেশটিতে রাজনৈতিক সংকট, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, মুদ্রার মানে রেকর্ড পতন ও চরম অর্থনৈতিক মন্দার মুখে এই বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিজ দেশে ফিরে আসতে বাধ্য করা হচ্ছে। দ্রুত এ সংকট উত্তোরণ না হলে সেদেশের অবশিষ্ট বাংলাদেশিদেরও দেশে ফিরে আসতে হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
লেবাননে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গেল মঙ্গলবার জরুরি আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকে এসব শ্রমিকদের জরুরিভিত্তিতে সরকারি উদ্যোগে চার্টার্ড বিমানে দেশে আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
একইসঙ্গে বৈঠকে বিমান ভাড়া ৪০০ ডলারের মধ্যে রাখারও প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে তাদের ফেরানোর ব্যয়ভার অর্থাৎ টিকিটের মূল্য সরকার পরিশোধ করবে নাকি প্রবাসীদেরই করতে হবে, সে বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। বিশেষত অনিবন্ধিত যেসব কর্মী প্রিমিয়ামের অর্থ জমা দেননি, প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় তাদের টিকিটের মূল্য পরিশোধে জোর আপত্তি জানিয়েছে।
লেবাননে বর্তমানে বৈধ-অবৈধ মিলে দেড় লাখের মতো বাংলাদেশি শ্রমিক রয়েছেন। আন্তঃমন্ত্রণালয়ের ওই বৈঠকে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব বলেছেন, যারা লেবাননে আছেন, তাদের অধিকাংশই অবৈধ অবস্থায় আছেন। তাদের দেশে ফেরানোর বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড থেকে টিকিটের মূল্য প্রদানের ক্ষেত্রে অনিবন্ধিত প্রবাসী যারা প্রিমিয়ামের টাকা জমা দেননি, তাদের বিমানের ব্যয় বহন করা যুক্তিযুক্ত হবে না বলেও মত তার। কারণ হিসেবে তিনি এটি নিবন্ধিত প্রবাসীদের টাকার সঞ্চয় করা অর্থ বলেও উল্লেখ করেন।
ওই বৈঠকে বাংলাদেশ বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও জানান, বিমানের ফ্লাইটে ইতোমধ্যে ৫ হাজার ৭৮৮ বাংলাদেশিকে লেবানন থেকে ফেরত আনা হয়েছে। জরুরিভাবে আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে লেবানন থেকে শ্রমিকদের ফেরাতে অন্য রুটের ফ্লাইট ডাইভার্ট করে আনতে হবে। সেক্ষেত্রে টিকিটের মূল্য তুলনামূলকভাবে কম (৪০০ মার্কিন ডলার) পড়বে। তবে ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে তাদের চার্টার্ড ফ্লাইটের মাধ্যমে আনতে হবে, যার জন্য টিকিটের মূল্য আরও ৫০ মার্কিন ডলার অর্থাৎ ৪৫০ মার্কিন ডলার হতে পারে।
এ বিষয়ে লেবাননে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জানিয়েছেন, আগে বিমানের চার্টার্ড ফ্লাইটের টিকিটপ্রতি ৪০০ মার্কিন ডলারে লেবানন থেকে প্রবাসীদের ফেরত আনা হয়েছে। নতুনভাবে টিকিটের জন্য ৪০০ মার্কিন ডলারের বেশি কখনও মূল্য প্রবাসীরা দিতে চাইবেন না।