ডেস্ক রিপোর্ট : পানির ওপর ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি চাষ করছে খুলনার তেরখাদা ও ডুমুরিয়া উপজেলার কৃষকেরা। তারা পানির ওপর বিভিন্ন মৌসুমী সবজি চাষ করছেন। স্বল্প পু্ঁজিতে অধিক লাভ হওয়ায় দিনের পর দিন এই পদ্ধতি জনপ্রিয় হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, দীর্ঘদিন পতিত ভূতিয়ার বিলের জলাভূমিতে এখন সবজির সমারোহ। সম্পূর্ণ রাসায়নিক সার ও কীটনাশকমুক্ত পরিবেশে ভাসমান বেডে লতা বিহীন সবজি উৎপাদন হচ্ছে। ভাসমান বেডে চাষাবাদ হচ্ছে- লালশাক, ওলকপি, উচ্চে, শসা, ধুনিয়া, ঢেঁড়শ, রসুন, পেঁয়াজ, আলুসহ অন্যান্য শাক-সবজি। গেল দু’বছরের চেয়ে এবার বাজার মুল্য বেশি হওয়ায় লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। এছাড়া ডুমুরিয়া উপজেলার মিকশিমিল বিল ও গোলনা খালে ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি চাষ হচ্ছে।
তেরখাদা উপজেলার ভাসমান সবজি চাষী হরিশ বিশ্বাস জানান, বসতবাড়ী ছাড়া আমার কোন জায়গা নেই। ভূতিয়ার বিলের মাঝখানে ভাসমান সবজি চাষ করে আমি এখন সুস্থ আছি। ছেলেমেয়ের পড়া, নতুন করে ঘর নির্মাণ ও দৈনন্দিন সকল খরচ নির্বাহের একমাত্র উৎস আমার সবজি ক্ষেত।
অপর কৃষক অধির মজুমদার বলেন, বাজারে এখানকার সবজি নিয়ে গেলে মানুষ আগেই এইটা কিনে নেয়। সকলেই জানেন এই বিলের সবজি বিষমুক্ত। পাইকাররাও আমাদের কাছ থেকে শাক-সবজি কিনে নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের দেখাদেখিতে অন্যরাও এখন ভূতিয়ার বিলে ভাসমান সবজি চাষাবাদ শুরু করেছে। সকলেই লাভবান হচ্ছি। একটা সময় তো এ বিলে কিচ্ছু হতোনা।
তেরখাদা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, সবজি চাষাবাদে উৎসাহিত করতে কৃষকদের মাঝে বিনামুল্যে বীজসহ প্রশিক্ষণ দিয়েছি। হাতে-কলমে কৃষকদের বেডে গিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছি। প্রতিটি বেডে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা খরচ হয়। আর প্রতিমাসে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা আয় হচ্ছে কৃষকদের। এতে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। তাদের দেখে অন্যরাও এগিয়ে আসছেন ভাসমান সবজি চাষে।
খুলনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. হাফিজুর রহমান জানান, ভাসমান বেডে সবজি চাষ করলে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে বিক্রিও করতে পারবে। আমরা এ প্রযুক্তি কৃষকদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি। একটি বেড তৈরিতে যে সকল জিনিস প্রয়োজন। সেগুলো সহজে পাওয়া যায় বলে জানান তিনি।