খুলনা বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও সর্ববৃহৎ ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা মাগুরা জেলার মহম্মদপুরে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ঘোড়দৌড় মেলাকে ঘিরে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে মাগুরার কমপক্ষে ২০ গ্রামজুড়ে। আনন্দ- উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়েছে জনে জনে। এরই মধ্যে অধিকাংশ বাড়িতেই আত্মীয় স্বজনদের আগমন ঘটেছে। ঘরে ঘরে বিভিন্ন রকম পিঠাপুলি তৈরিসহ নানা আয়োজনও শুরু হয়ে গেছে। প্রতি বছর বাংলা সনের ২৮ পৌষকে ঘিরে এই আয়োজন, উৎসব ও ব্যস্ততা চোখে পড়ে। এদিন উৎসবমুখর পরিবেশে মাগুরার মহম্মদপুরের বড়রিয়া গ্রামে অনুষ্ঠিত হয় খুলনাঞ্চলের সর্ববৃহৎ শতবছরের প্রাচীনতম ও ঐতিহ্যবাহী ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা। অন্যান্য বছরের ন্যায় এবারো চিরচেনা রূপে সেজেছে মেলা প্রাঙ্গণ। খুলনা বিভাগের শতবর্ষী ও সর্ববৃহৎ ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা আজ রবিবার অনুষ্ঠিত হবে । ঘোড়দৌড়ের আগে ও পরে মেলা চলে সপ্তাহ খানেক উপজেলার অন্যান্য গ্রামের মতোই বড়রিয়া। উল্লেখযোগ্য তেমন কোনো বৈশিষ্ট না থাকলেও গ্রামটি খুবই বড়। এ গ্রামেরই সানু সরদার নামের এক আমুদে ব্যক্তি মেলার প্রতিষ্ঠাতা। শতবছর আগে মাগুরা সদর উপজেলার বাহরবা গ্রামে প্রতি বছরের ২৮ পৌষ অনুষ্ঠিত হতো ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা ওই মেলায় বড়রিয়া গ্রামের সানু সরদার তার ঘোড়া নিয়ে অংশ নিতেন এবং ছিনিয়ে আনতেন প্রথম পুরস্কার। এক বছর মেলা কমিটি জোরপূর্বক তার
ঘোড়াকে পরাজিত করে। প্রতিবাদ করায় তিনি লাঞ্ছিত হন। এরপর ক্ষোভে-দুঃখে তিনি পরের বছর থেকেই নিজ গ্রামে ওই একই দিনে ঘোড়দৌড় মেলার আয়োজন করতে থাকেন। কালক্রমে প্রচার-প্রচারণা ছাড়াই ওই মেলাটিই হয়ে উঠেছে দক্ষিণ- পশ্চিমাঞ্চলের সর্ববৃহৎ ।
শনিবার সরেজমিনে দেখাগেছে, জমজমাট হয়ে উঠেছে মেলার মাঠ। শ’ শ’ দোকান বসেছে। নাগরদোলা স্থাপনের কাজও শেষ হয়েছে। সারিবদ্ধ ট্রাক থেকে বাহারি সব ফার্নিচার নামিয়ে সাজানো হয়েছে স্টল। নানা ধরনের খেলনা সামগ্রী ও প্রসাধনী থরে থরে সাজিয়েছেন বিক্রেতারা। মিষ্টি-মিঠাই তৈরির চুলায় আগুন জ্বলেছে, তৈরি হচ্ছে নানান রকম মিষ্টি সামগ্রী। বছরঘুরে বড়রিয়া গ্রাম ফিরে পেয়েছে সেই চিরচেনা রূপ।
বিভিন্ন স্থানের লাখো মানুষের সমাগমে মহম্মদপুরের বড়রিয়া হয়ে ওঠে উৎসবমুখর। ধনী-গরিব-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আবাল বৃদ্ধ বনিতার মিলন কেন্দ্রে পরিণত হয় মেলার মাঠ। নতুন সাজে সজ্জিত হয় মেলা প্রাঙ্গণ। উপজেলা সদর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এই মেলার মাঠ অবস্থিত ।