৫০ বছরের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের মূল্যায়ন এবং আগামীর অন্তত ২৫ বছরে একসঙ্গে পথচলার নকশা ঠিক করতে আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনায় বসছেন সফররত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এমনটাই আভাস দিয়েছেন ঢাকা এবং দিল্লির কূটনীতিকরা। জানিয়েছেন- ওই বৈঠকের পর কমপক্ষে ৪টি সমঝোতা স্মারক সই হওয়া ছাড়াও সাতটি প্রকল্প উদ্বোধন করবেন দুই নিকট প্রতিবেশী দেশের প্রধানমন্ত্রী। শনিবার দিনের শুরুতে ঢাকার বাইরে কাটালেও দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে প্রথমে একান্তে এবং পরবর্তীতে সফরসঙ্গী গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধিদের নিয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনায় বসবেন মোদি। সইয়ের জন্য প্রস্তুত সমঝোতা স্মারকগুলো হচ্ছে দুর্যোগ দমনে সহযোগিতা, ব্যবসা-বাণিজ্য বিকাশে অশুল্ক বাধা দূরের পদক্ষেপ, তথ্য-যোগাযোগ এবং রাজশাহীতে খেলার মাঠ বিষয়ে দুই প্রকল্প বাস্তবায়ন। তবে শেষ মুহূর্তে এই সংখ্যা বাড়তে পারে বলে সরকারের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা ইঙ্গিত দিয়েছেন। কূটনীতিক সূত্রগুলো বলছে, গত এক দশকে ভারতের দীর্ঘদিনের নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগ দূর করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব সহযোগিতা করেছে। যা দুই দেশের সম্পর্কোন্নয়নের ক্ষেত্রে বড় অনুঘটক হিসেবে কাজ করছে।
তাই সম্পর্কের ভবিষ্যতের স্বার্থে বাংলাদেশ এখন ব্যবসা-বাণিজ্যের মধ্য দিয়ে অর্থনৈতিক সহযোগিতায় অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। আর বাণিজ্য বাড়াতে হলে সংযুক্তি অপরিহার্য। আর সংযুক্তির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সহযোগিতাটা শুধু দুই দেশের মধ্যে সীমিত না রেখে নেপাল ও ভুটানকেও যুক্ত করতে চায়। কারণ, একসঙ্গে চার দেশের উন্নতি একটি নতুন দক্ষিণ এশিয়ার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের ভাষ্য মতে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেপালের প্রেসিডেন্ট ও ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় সংযুক্তিতে বিশেষ জোর দিয়েছেন। তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আলোচনাতেও প্রসঙ্গটি তুলবেন। উল্লেখ্য, হাসিনা-মোদি বৈঠক বিষয়ক একটি যৌথ ঘোষণাও সই হবে। এদিকে যে সাত প্রকল্প উদ্বোধন হবে, তা হলো- শিলাইদহের সংস্কারকৃত কুঠিবাড়ী, মেহেরপুরের মুজিবনগর থেকে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া হয়ে কলকাতা পর্যন্ত স্বাধীনতা সড়ক, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় শহীদদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিসমাধি, বাংলাদেশের কাছে ভারতের ১০৯টি অ্যাম্বুলেন্স হস্তান্তর, চিলাহাটি-হলদিবাড়ী রুটে যাত্রীবাহী ট্রেন, দু’টি সীমান্তহাট এবং স্মারক ডাকটিকিটের মোড়ক উন্মোচন। তবে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হলেও পশ্চিমবঙ্গ নির্বাচনের কারণে এখনই স্বাধীনতা সড়কে চলাচল এবং চিলাহাটি-হলদিবাড়ী রুটে যাত্রীবাহী ট্রেনে যাতায়াত শুরু হচ্ছে না বলে জানা গেছে।