বিবেকানন্দ মিস্ত্রীর
আমরা দুটি প্রাণী
আমি তার পতি তাঁরেও আমার পত্নী বলেই জানি।
বিয়ে হয়েছিল বিশ সাল আগে
আজ বিশ সাল বাদে,
কথা নাহি হয় দুটি প্রাণী মোরা
জড়াই না বিবাদে।
একই পথ দিয়ে আসা যাওয়া করি
একই সিঁড়ি বেয়ে উঠি,
ওখানে ই শেষ বন্ধ দুজনার
জানালা কপাট দুটি।
একটি প্রাচীর ব্যবধান রেখে
পাশাপাশি থাকি শুয়ে,
একই কলের জল দিয়ে রোজ
স্নান করি মোরা দুই এ।
মোরা এতদিন সঙ্গী বিহীন
দুজনে দুটো ঘরে,
প্রান হীন সেই একটি দেওয়াল
রেখেছে আলাদা করে।
জানিনা তার মনে কিবা আছে
মোর মনে বড় ব্যথা,
ভাবি ভেঙে ঐ বাঁধার প্রাচীর
তার সাথে বলি কথা।
একদিন রাতে বিছানায় শুয়ে
করুন কাতর স্বরে,
কাহারে যেন নাম ধরে সে
ডাকছে বিকার ঘোরে।
নিজ মন সনে ক্ষণিক যুজিয়া
তার ঘরে ছুটে যাই,
দেখি বিছানায় একেলা শুয়ে
কাছে তার কেহ নাই।
অতি তারাতারি কাছে গিয়ে আমি
হাত রাখি তার ভালে,
দেখি সেথা যেন আগে থেকে কেউ
আগুন রেখেছে জ্বেলে।
কি করি ভাবিয়া ডাক্তার বাবুকে
ডাকিবার তরে যাই,
ফিরে এসে দেখি আঁখি মেলিবার
শক্তি তাহার নাই।
সারারাত আমি বিছানার পাশে
একটি প্রদীপ জ্বেলে,
তার পাশে বসে সেবা করে চলি
পুরানো বিবাদ ভুলে।
ডাক্তার বাবুর জারি জুরি যত
সব বুঝি হলো ফেল,
আঁধারের সাথে জুজিয়া তাহার
ফুরায়ে এসেছে তেল।