রবিবার, ২৫ মে ২০২৫, ১০:২১ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
সর্বশেষ সংবাদঃ
মোহনপুরে ৩ দিন ব্যাপি ভূমি মেলা উদ্বোধন রাজশাহীর জন নিরাপত্তা বিঘ্নকারী ট্রাইব্যুনাল ও দায়রা জজ -২ আদালতে দুই জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড মোহনপুরে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ ক ক টে ল ও দেশীয় অ স্ত্র সহ আটক ৫ রাজশাহী কোর্ট চত্বরে গণঅধিকার পরিষদের প্রাঙ্গণে লিফলেট বিতরণ মাদক মামলায় ০৮ বছরের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক ০১ জন আসামী গ্রেফতার মোহনপুরে হিমাগারে বাঁশের বেড়া অপসারণ করলেন প্রশাসন  রাজশাহীতে ক্লুলেস হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করলো পিবিআই দুর্গাপুরে ডিপ টিউবওয়েল নিয়ে আধিপত্যকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে এক যুবক নিহত আহত ১০ , খুনিদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাব ক্রিকেট টুর্ণামেন্টে সাধারণ সম্পাদক একাদশ বিজয়ী রাজশাহী জেলার পুঠিয়া থানা হতে অবৈধ মাদকদ্রব্য ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেটসহ মাদক ব্যবসায়ী ফারুক‘কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৫ বাগমারায় টেলিগ্রাম অ্যাপসে টাকা হাতিয়ে নেয়া চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার  ছাত্রীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় ধরা রাবি শিক্ষক, ভিডিও ভাইরাল মানববন্ধনে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ব্যবহার: আইনজীবীর লিগাল নোটিশ চাঁপাইনবাবগঞ্জে আন্তঃনগর ট্রেন চালুর দাবীতে ট্রেন অবরোধ ও মানববন্ধন কর্মসূচী পালন হোস্টেলের ভাড়া কমানোর দাবিতে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে রাজশাহী কলেজ অধ্যক্ষ রাজশাহীর পুঠিয়া থেকে ১২ মামলার মূল হোতা সাব্বির‘কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৫ শিবগঞ্জে ২ কেজি গাঁজাসহ গ্রেফতার এক রাজশাহীর তানোরে গলায় ফাস দিয়ে যুবকের আত্মহত্যা রাজশাহী জেলা গণধিকার পরিষদের নতুন কমিটি অনুমোদন রাজশাহীর দূর্গাপুরে হত্যা মামলার ৫ জন এজাহার নামীয় পলাতক আসামীদেরকে কক্সবাজার থেকে গ্রেফতার
Notice :
প্রিয় পাঠক   দৈনিক মাগুরার কথা   অনলাইন নিউজ পোর্টালে আপনাকে স্বাগতম । গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের নিয়ম মেনে বস্তু নিষ্ঠ তথ্য ভিত্তিক সংবাদ প্রচার করতে আমরা বদ্ধ পরিকর ।  বি:দ্র : এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা,  ছবি ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি । এখানে ক্লিক করুণ Apps  

কারসাজিতে বেসামাল কাঁচাবাজার

মাগুরার কথা ডেক্স / ২৯৪ বার পঠিত হয়েছে।
নিউজ প্রকাশ : বুধবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২১, ৬:৩৬ অপরাহ্ন

চলতি মৌসুমে পেঁয়াজ-আলুসহ সব ধরনের সবজির বাম্পার ফলন হলেও নানা কারসাজিতে কাঁচামালের বাজার বেসামাল হয়ে উঠেছে। ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধির কারণে বর্তমানে যে বাড়তি খরচ হচ্ছে পরিবহণ মালিক-শ্রমিকরা তার চেয়ে ৬৭ শতাংশ বেশি ট্রাক ভাড়া আদায় করছেন। আর এ দোহাই দিয়েই সবজি ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম দেড় থেকে দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিয়েছেন। এর সঙ্গে ঘাটে ঘাটে চাঁদাবাজি ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাঠপর্যায়ে অনুসন্ধান চালিয়ে সম্প্রতি সরকারের একটি দায়িত্বশীল গোয়েন্দা সংস্থা এ ব্যাপারে লিখিত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে স্থায়ী সমাধানের জন্য গোয়েন্দারা চার দফা সুপারিশও করেছেন। এতে বলা হয়েছে, কাঁচামালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষক থেকে শহরের ভোক্তার কাছে পৌঁছানো পর্যন্ত হাত বদল কমাতে হবে। এর সব স্তরে দাম নির্ধারণ করে নিয়মিত মনিটরিং করতে হবে। পরিবহণ ব্যয় কমাতে বিভিন্ন পর্যায়ে চাঁদাবাজি বন্ধ করা জরুরি। পাইকারি বাজার নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করে খুচরা বাজারের মূল্য তালিকা প্রস্তুত ও বাস্তবায়নে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। একই সঙ্গে সব স্তরের কাঁচামাল ব্যবসায়ীদের এলাকাভিত্তিক তালিকা তৈরি করার তাগিদ এবং সেই সঙ্গে নীতিমালা প্রণয়ন করে ব্যবসায়ীদের তার আওতাভুক্তির মাধ্যমে খুচরা বাজার নিয়ন্ত্রণ করার সুপারিশ করেছেন গোয়েন্দারা। গোয়েন্দা অনুসন্ধানের ‘পিক পয়েন্টে’ বলা হয়েছে, ডিজেলের দাম বাড়ার আগের ও পরের মূল্য পর্যালোচনায় দেখে গেছে মাঠপর্যায়ে কাঁচামালের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। শীতকালীন সবজির উৎপাদন বেড়েছে। এ পরিস্থিতিতে বাজারে সবজির দাম তুলনামূলক কম হওয়ার কথা। অথচ সবজির দাম না কমে দেড় থেকে দুইগুণ বেড়েছে। কোনো কোনো পণ্যের ক্ষেত্রে মূল্যবৃদ্ধির হার আরও বেশি। গোয়েন্দা পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, ডিজেলের দাম বৃদ্ধির কারণে বগুড়ার মহাস্থানহাট থেকে ঢাকার কারওয়ান বাজার পর্যন্ত ট্রাকে পণ্য পরিবহণে প্রতি কেজি সবজির ভাড়া ১১ পয়সা বেশি হয়। অথচ পরিবহণ মালিকদের কারসাজিতে তা ৩৬ পয়সা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। যা বাড়তি খরচের ৬৬ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে সবজি ব্যবসায়ীরা এ ইসু্যটি সামনে দাঁড় করিয়ে পণ্যের দাম আগের চেয়ে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছেন। গোয়েন্দা সংস্থার দেওয়া পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে যেকোনো সবজি শহরকেন্দ্রিক ভোক্তার কাছে পৌঁছানোর আগে বেশ কয়েকবার হাত বদল হয়। হাতবদল, যান ব্যবহার ছাড়াও অসাধু ব্যবসায়ীদের অতিরিক্ত মুনাফালোভী মনোভাব, বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যানজটসহ নানাবিধ কারণে বাজারে সবজির দাম বৃদ্ধি পায়। পাইকারি ক্রয়মূল্যের শতকরা ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে তারও বেশি লাভ করার প্রবণতা খুচরা ব্যবসায়ীদের মধ্যে লক্ষ্য করা গেছে। অন্যদিকে উত্তরবঙ্গ থেকে দেশের সবজির চাহিদার বড় অংশ পূরণ করা হলেও সেখানে তেমন বড় কোনো পাইকারি বাজার নেই। যার কারণে রংপুর, নাটোর, বগুড়া ইত্যাদি জেলা থেকে সবজি গাড়িতে করে বড় পাইকারি বাজার কুমিলস্নার নিমসার আড়তে আসে। এখান থেকে আবার হাত বদল হয়ে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ অন্যান্য জেলা শহরে যায়। এখানে আরেক দফা অতিরিক্ত পরিবহণ ব্যয় ও হাত বদলের কারণে খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবার যারা কারওয়ান বাজার থেকে পুনরায় পণ্য পাইকারি বাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় নেন, তাদের পণ্যবাহী বাহনেও বিভিন্ন রকমের খরচ করতে হয়। প্রথমেই তাদের পিকআপকে ২/৩ হাজার টাকার বিনিময়ে কারওয়ান বাজার স্ট্যান্ডে বার্ষিক ভিত্তিতে তালিকাভুক্ত হতে হয়। এছাড়া প্রতি ট্রিপে শতকরা ১০ টাকা হারে স্ট্যান্ড নিয়ন্ত্রণকারীদের দিতে হচ্ছে। কারওয়ান বাজারে চারশ’ বর্গফুট জায়গা প্রতি রাতের জন্য ভাড়া ২ হাজার ১শ’ টাকা এবং একই জায়গায় প্রতিদিনের জন্য সাড়ে তিন হাজার টাকা দিতে হয়, যা পণ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলে। বগুড়ার মহাস্থানহাট থেকে কারওয়ান বাজার পর্যন্ত প্রতিটি পণ্যবাহী ট্রাককে যেসব ঘাটে চাঁদা দিতে হয় তার তালিকাও গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উলেস্নখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, বগুড়া পৌরসভার ৫০ টাকা টোল দিয়ে যাত্রা শুরু করতে হয়। এরপর শেরপুর ৫০ টাকা, সিরাজগঞ্জ ট্রাক মালিক-শ্রমিক সমিতিতে ৫০ টাকা, সিরাজগঞ্জ শহরে গাড়ি ঢুকলে ৫০ টাকা, সিরাজগঞ্জ মোড় হাইওয়ে পুলিশ খরচ (মাসিক) ৫শ’ টাকা, যমুনা সেতু গোল চত্বর হাইওয়ে পুলিশ খরচ (মাসিক) ৫শ’ টাকা, টাঙ্গাইল মোড় হাইওয়ে পুলিশ খরচ (মাসিক) ৫শ’ টাকা, আমিনবাজার, সাভার (লাঠিয়াল বাহিনী) প্রতি ট্রিপ এক থেকে ২শ’ টাকা, কারওয়ান বাজার পার্কিংয়ে ৫শ’ টাকা চাঁদা দিতে হয়। এছাড়া প্রতি ট্রিপে যমুনা সেতুর টোল ১ হাজার ৪শ’ টাকা রয়েছে। এর বাইরে বগুড়ার মহাস্থান থেকে ঢাকায় আসায় প্রতিটি ৫ টনের ট্রাকের প্রতি ট্রিপে ডিজেলে সাড়ে ছয় হাজার টাকা, চালক-হেলপারের বেতন দুই হাজার টাকা এবং রোডে দুই হাজার টাকা খরচ হয়। যদিও ৫ টনের ট্রাকে সাধারণত ১২ থেকে ১৩ টন সবজি পরিবহণ করা হচ্ছে। ডিজেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় খরচ কতটা বেড়েছে তা-ও গোয়েন্দা প্রতিবেদনে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, একটি ৫ টন ট্রাক এক লিটার ডিজেলে আড়াই থেকে তিন কিলোমিটার যায়। ৩ টন মিনি ট্রাক এক লিটারে যায় ৫ থেকে ৬ কিলোমিটার। এক থেকে দুই টন পিকআপ এক লিটারে যায় ৭ থেকে সাড়ে ৭ কিলোমিটার। এ হিসেবে বগুড়ার মহাস্থান থেকে ২০২ কিলোমিটার দূরত্বে ঢাকা যেতে গড়ে ডিজেল লাগে ৫ টন ট্রাকের ৮০ থেকে ৮১ লিটার। সম্প্রতি ডিজেলের দাম লিটারপ্রতি ৬৫ টাকা থেকে ৮০ টাকায় সমন্বয় করায় বর্তমানে ডিজেল বাবদ খরচ হয় ৬ হাজার ৪৬৪ টাকা। ডিজেলের দাম বৃদ্ধির আগে খরচ হতো ৫ হাজার ২৫২ টাকা। এ হিসেবে বর্তমানে ডিজেল বাবদ অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে ১ হাজার ২১২ টাকা। যেহেতু অন্যান্য খরচ আগের মতোই রয়েছে, সেহেতু ডিজেলের দাম বৃদ্ধির কারণে ৫ টনের একটি ট্রাকের ভাড়া সর্বোচ্চ দেড় হাজার টাকা বৃদ্ধি পাওয়ার কথা। অথচ ট্রিপপ্রতি ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। যার কারণে কাঁচামালের বাজার বেসামাল হয়ে উঠেছে। বগুড়ার স্থানীয় কৃষক, মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবসায়ী, আড়তদার ও খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেও গোয়েন্দা প্রতিবেদনের সত্যতা পাওয়া গেছে। বগুড়া থেকে কাঁচা মরিচ কিনে কারওয়ান বাজারে বিক্রি করা একজন বেপারি জানান, তিনি ৫ টনের একটি ট্রাকে ২০২ বস্তা কাঁচা মরিচ নিয়ে আসেন। প্রতি বস্তায় ৬৫ কেজি করে মোট ১৩ হাজার কেজি কাঁচা মরিচ ছিল। ক্রয়কৃত কাঁচা মরিচ ঢাকায় পাঠানোর ট্রাকে পৌঁছাতে প্রতি মণে লেবার খরচ, ভ্যান ভাড়া ও স্থানীয় খাজনায় মোট ২০ টাকা খরচ হয়। এছাড়া প্রতিটি বস্তা কিনতে ১৮ টাকা দিতে হয়েছে। কারওয়ান বাজারে পৌঁছানোর পর বস্তাপ্রতি লেবার খরচ ২০ টাকা এবং ভ্যান ভাড়া ৩০ টাকা। আড়তের খাজনা এক টাকা। অর্থাৎ প্রতি কেজি কাঁচা মরিচে ওই বেপারির মোট খরচ ৪৫ টাকা, যা আড়ত থেকে পাইকারদের কাছে বিক্রি করা হয় ৫৫ টাকা দরে। পাইকারের কাছ থেকে কেনার পর ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে খুচরা বিক্রেতারা তা একশ’ টাকা থেকে একশ’ দশ টাকা দরে বিক্রি করে। একইভাবে নাটোরের হবিতপুর থেকে আসা একজন বেপারির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কৃষকের কাছ থেকে শিম কিনে ঢাকায় আনতে প্রতি কেজিতে ১২ টাকা খরচ হয়। এর সঙ্গে আরও ৩ টাকা যোগ করে তারা আড়তে বিক্রি করেন। পরবর্তীতে পাইকাররা কেজিপ্রতি ৬/৭ টাকা বাড়িয়ে তা খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করেন। ভোক্তার কাছে পৌঁছতে এর সঙ্গে আরও ৫ থেকে ৭ টাকা যুক্ত হয়। বেপারিদের দাবি, কৃষকরা যে দরে কাঁচামাল বিক্রি করেন, ভোক্তাদের তা কিনতে ৩ থেকে ৪ গুণ বেশি অর্থ খরচ করতে হয়। তবে এর খুব সামান্য অংশ তারা লাভ হিসেবে পান। অতিরিক্ত পণ্য পরিবহণ খরচ, ঘাটে ঘাটে চাঁদাবাজি, অব্যবস্থাপনা ও সর্বোপরি হাত বদলের সংখ্যা বেশি হওয়ায় কাঁচামালের বাজার অস্থির থাকছে।


এই বিভাগের আরও খবর
এক ক্লিকে বিভাগের সবখবর
error: Content is protected !!
error: Content is protected !!