বিবাহ বহির্ভূত অবৈধ সম্পর্ক ও প্রতারণামূলক আর্থিক লেনদেনের জেরে খুলনার কয়রা উপজেলার বামিয়া গ্রামে ট্রিপল মার্ডারের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার দুপুরে খুলনা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ মাহবুব হাসান সাংবাদিকদের এ তথ্য দিয়েছেন।
তিনি জানান, ট্রিপল হত্যাকাণ্ডের অন্যতম আসামী আব্দুর রশিদ গাজী। তিনি খুব চতুর। হত্যার পর থেকে তিনি পলাতক ছিলেন। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে তাকে ৮ জানুয়ারী যশোরের অভয়নগর উপজেলা থেকে আটক করা হয়। হত্যার ব্যাপারে আদালতে তিনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী এ মামলায় ৭ জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
রশিদ গাজীর স্বীকারোক্তি বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার জানান, মামলার অপর আসামী জিয়া ও রাজিয়া সুলতানার মধ্যে অবৈধ সম্পর্ক ছিল। তাদের সম্পর্কে বাধা দেওয়ায় হাবিবকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য পরিকল্পনা করা হয়। ২০২১ সালের ২৫ অক্টোবর রাত ১২টার দিকে জিয়া ও সামসুর নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী হাবিব, তার স্ত্রী বিউটি ও কন্যা টুনিকে হাত পা বেঁধে ফেলে। পরে স্ত্রী ও মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করে পানিতে ফেলে দেওয়া হয়। হত্যার সময় ছয়জন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল।
মাহবুব হাসান জানান, ভিকটিম হাবিবুরের সঙ্গে অন্য আসামীদের আর্থিক লেনদেন ছিল। হাবিব আর্থিক প্রতারণারও শিকার হয়েছিলেন। হত্যার পর তাদের পানিতে ফেলে দেওয়ার কারণে ধর্ষণের আলামত নষ্ট হয়ে যায়। মামলার অন্য আসামীদের রিমাণ্ডে নেওয়া হয়েছে। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে খুব দ্রুত আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে।
গত বছরের ২৫ অক্টোবর কয়রা উপজেলার বামিয়া গ্রামের হাবিবুর রহমান, তার স্ত্রী বিউটি ও মেয়ে হাবিবা সুলতানা টুনিকে হত্যা করা হয়। পরের দিন স্থানীয় আব্দুল মাজেদের বাড়ির পাশের একটি পুকুর থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘটনায় হাবিবের মা কোহিনূর বেগম বাদি হয়ে কয়রা থানায় অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ এই হত্যার সঙ্গে জড়িতদের আটক করতে তৎপর হয়।
কয়রা, খুলনা প্রতিনিধি
তারিখঃ- ১০/০১/২২ ইং।