শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০১:২৫ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
সর্বশেষ সংবাদঃ
মাগুরায় পুলিশের অভিযানে দুইটি চোরাই মোটরসাইকেল সহ আটক তিন মহম্মদপুরে ৩২ পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট সহ পুলিশের হাতে আটক ১ মহম্মদপুরে দেশীয় অস্ত্র সহ ডাকাত দলের সদস্য গ্রেফতার শ্রীপুরে বিশেষ আয়োজনে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে ব্যতিক্রমী আয়োজনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো মাগুরা রিপোর্টার্স ইউনিটের বাৎসরিক আনন্দ ভ্রমণ শেষ পৌষের কনকনে শীতে কাঁপছে মাগুরা! মাগুরার মহম্মদপুরে শতবর্ষী ঐতিহ্যবাহী বড়রিয়ার মেলা শুরু! মাগুরার শ্রীপুরে পুলিশের বিশেষ অভিযানে ১০ (দশ) কেজি গাজা উদ্ধার। মাগুরার জনগণ নির্বিঘ্নে উৎসব মুখর পরিবেশে ভোট দিতে পারবে – পুলিশ সুপার মাগুরায় জমে উঠেছে ফুটপাতের শীতের পিঠা! মাগুরা মহম্মদপুরে জোড়া খুনের ঘটনায় ২৪ ঘন্টার মধ্যে মূল আসামী গ্রেফতার” মহম্মদপুরে আপন দুই ভাইয়ের গলাকাটা লাশ উদ্ধার আটক-২ মাগুরায় ব্রিজের নিচে হতে উদ্ধারকৃত কঙ্কালের রহস্য উদঘাটন সহ মূল আসামি গ্রেফতার। ঝরে পড়া ৩০ শিশুকে স্কুলে ফেরাল জেলা প্রশাসক মাগুরা শালিখায় অসহায়, দুঃস্থ ও প্রতিবন্ধীদের মাঝে “এক পেট আহার অত:পর হাসি” এর পক্ষ থেকে খাবার বিতরণ প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গাপূজা ২০২৩ মাগুরার মহম্মদপুরে পুজা মন্ডপ পরিদর্শন ও অনুদান বিতরণ মাগুরা জেলার তিন উপজেলা নির্বাহী অফিসারগনের বিদায় এবং সদ্য তিন উপজেলা নির্বাহী অফিসারগনের যোগদান উৎসবমুখর পরিবেশে চলছে বরেন্দ্র প্রেসক্লাবের নির্বাচন ইসলামী ব্যাংক কামারখালী বাজার আউটলেটের গ্রাহক সমাবেশ অনুষ্ঠিত
Notice :
প্রিয় পাঠক   দৈনিক মাগুরার কথা   অনলাইন নিউজ পোর্টালে আপনাকে স্বাগতম । গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের নিয়ম মেনে বস্তু নিষ্ঠ তথ্য ভিত্তিক সংবাদ প্রচার করতে আমরা বদ্ধ পরিকর ।  বি:দ্র : এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা,  ছবি ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি । এখানে ক্লিক করুণ Apps  

এশিয়ার শ্রেষ্ঠ শিকারী সাতক্ষীরার পচাব্দী গাজীর বাঘ শিকারের বন্দুক দেখলেন বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম

আকবর কবীর।।সাতক্ষীরাঃ / ১৩৯৪ বার পঠিত হয়েছে।
নিউজ প্রকাশ : বুধবার, ৩ মার্চ, ২০২১, ৬:১৯ অপরাহ্ন

এশিয়ার বিখ্যাত বাঘ শিকারী গাবুরা ইউনিয়নের সোরা গ্রামের পচাব্দী গাজীর ঐতিহাসিক সেই রয়েল বেঙ্গল টাইগার শিকারের বন্দুকটিকে স্বচক্ষে দেখতে সাতক্ষীরার শ্যামনগরে হেলিকপ্টারে উড়ে আসলেন বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম। তিনি হেলিকপ্টার থেকে নেমে সরাসরি শ্যামনগর থানায় চলে যান এসময় তাকে অভিনন্দন জানান সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম ও নীলডুমুর ১৭ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ইয়াসিন চৌধুরী।এর পরে তিনি শ্যামনগর থানায় রক্ষিত ঐতিহাসিক সেই বন্দুকটি দেখেন। বিখ্যাত বাঘ শিকারী পচাব্দী গাজী এই বন্দুক দিয়ে ৪২ টি রয়েল বেঙ্গল টাইগার হত্যা করেছিলেন।মানুষখেকো এইসব বাঘগুলিকে হত্যা করার জন্য পচাব্দী গাজী বিভিন্ন সময়ে পুরস্কৃত হয়েছেন। তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার পচাব্দী গাজীকে বেঙ্গল টাইগার দামে অভিহিত করেছিলেন।পচাব্দী গাজীর মৃত্যুর পর তার ব্যবহৃত বন্দুকটি উত্তরাধিকারসূত্রে তার পুত্র আবুল হোসেন পাওয়ার পরে বন্দুকটি রিনিউ না করার কারণে শ্যামনগর থানার অস্ত্রাগারে দীর্ঘ কুড়ি বছর ধরে পড়ে আছে।ঐতিহাসিক এই বন্দুকটি একনজর চোখে দেখার জন্য বিজিবি মহাপরিচালকের আজকের এই সফর।
এ সময় তিনি বিজিবির অফিসার ও সৈনিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, সীমান্ত রক্ষায় তাদেরকে আরো তৎপর হতে হবে। মাদক, নারী পাচার ও চোরাচালানের ব্যাপারে কোনো ছাড় দেয়া হবে না।

পচাব্দী গাজীর বাঘ শিকারের বীরত্ব গাঁথা :

পচাব্দী গাজী বিখ্যাত বাঘ শিকারী। সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের সোরা গ্রামের এক ঐতিহ্যবাহী শিকারী পরিবারে ১৯২৪ সালে জন্ম। সবাই তাকে পচাব্দী গাজী নামে চেনে কিন্তু তার প্রকৃত নাম আব্দুল হামিদ গাজী। স্বল্পশিক্ষিত মানুষটি ছিলেন রোগা- পাতলা।পিতা মেহের গাজী, পিতামহ ইসমাইল গাজী ছিলেন খ্যাতনামা শিকারী। তার পিতা মেহের গাজী ৫০টি বাঘ শিকার করার গৌরব অর্জন করেছিল। ১৯৪১ সালে মাত্র সতেরো বছর বয়সে খুলনা জেলার পাইকগাছা থানার ‘গোলখালির সন্ত্রাস’ নামে পরিচিত একটি নরখাদক বাঘ হত্যা
করার মাধ্যমে পচাব্দী গাজীর শিকারী জীবন শুরু হয়। শিকারের জন্য উত্তরাধিকার সূত্রে তিনি লাভ করেন পিতার ডাবল বেরেল মাজল-লোডিং বন্দুকটি। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান ও বাংলার সে সময়ের গভর্নর মোনায়েম খা এবং জার্মান চ্যান্সেলরের সুন্দরবন পরিদর্শনে গাইড হিসেবে কাজ করেন এবং পুরস্কৃত হন। এছাড়া তিনি নেপালের প্রয়াত রাজা
মাহেন্দ্র ও তার ছেলে প্রয়াত বীরেন্দ্রকে নিয়ে শিকার অভিযানে যান। তিনি জীবনে অনেকগুলো নামি-দামি সার্টিফিকেট ওস্মারক লাভ করেন। পশুশিকারে তাঁর বুদ্ধিমত্তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়লে তৎকালীন বনকর্মকর্তার উদ্যোগে ১৯৫৫ সালে তিনি বনবিভাগের অধীনে বনপ্রহরীর কাজে যোগদান করেন। এ কাজে যোগদানের পরপরই শুরু হয় দুর্ধর্ষ বাঘের সঙ্গে তাঁর বিচিত্র লড়াইয়ের লোমহর্ষক জীবনের এক নতুন অধ্যায়। তিনি সরকারের বনবিভাগের বৈধ শিকারীর সার্টিফিকেট নিয়ে সুন্দরবনের বাওয়ালি , মাওয়ালি, মাঝি ও জেলেদের জীবনরক্ষায় অবতীর্ণ হন মুক্তিদাতার ভূমিকায় এবং রক্ষা করেন অজস্র শ্রমিকের প্রাণ। তাঁর এই কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ তৎকালীন পাকিস্তান সরকার ১৯৬৮ সালে তাঁকে ‘সনদ-ই-খেদমত’ জাতীয় পুরস্কারে ভূষিত করে। পচাব্দী গাজীর বাঘ শিকার করার কৌশল ছিল অন্যদের থেকে স্বতন্ত্র। বাঘকে বশীভূত করার উদ্দেশ্যে তিনি অলৌকিক পদ্ধতির পরিবর্তে আত্মোদ্ভাবিত বিভিন্ন কৌশল,গভীর ধীশক্তি ও প্রযুক্তির আশ্রয় নিতেন। তিনি পাগমার্ক দেখে বাঘের আকৃতি অনুধাবন করতে পারতেন। তাছাড়া পদচ্ছাপ দেখে পশুর শ্রেণি এবং তার গতিবিধি নির্ণয়েও তিনি দক্ষ ছিলেন। বাঘের গতিবিধি চিহ্নিতকরণে তিনি কখনও দিন-রাত পর্যবেক্ষণে থাকতেন। তিনি নিরস্ত্র অবস্থায়ও হিংস্র প্রাণীদের সঙ্গে লড়েছেন। বাঘিনীর ডাক, গাছ কাটার শব্দ কিংবা পাতা সংগ্রহের শব্দ নকল করে তিনি বাঘকে প্রলুব্ধ করতেন। জঙ্গলে কল পেতে কিংবা ১৫ হাত উঁচু মাচান তৈরি করেও তিনি শিকার করতেন। শরৎ, হেমন্ত ও
বসন্তের পূর্ণিমা-অমাবস্যা হচ্ছে বাঘের প্রজনন সময়। স্থানীয় ভাষায় একে বলে‘স্যাঁড়াসাঁড়ির কোটাল’। এ সময় পচাব্দী গাজী বাঘিনীর ডাক নকল করে পাগলপ্রায় মিলনোন্মত্ত বাঘকে হত্যা করতেন।পচাব্দী গাজীর বাঘ শিকারের আরো দুটি পদ্ধতি হলো ‘গাছাল’ ও ‘মাঠাল’। গাছাল হলো গাছে চড়ে শিকার, আর মাঠাল হলো জঙ্গলের ভিতর চলতে চলতে শিকার। মাঠাল পদ্ধতিতে শিকার করে তিনি একটি দো-নলা বন্দুক পুরস্কার পান। সাতক্ষীরার বুড়ি গোয়ালিনী ফরেস্ট রেঞ্জে ‘আঠারোবেকি’ এলাকায় ‘টোপ’ পদ্ধতিতে তিনি যে বাঘটি হত্যা করেন সেটি ছিল সুন্দরবনের শিকারের ইতিহাসে দীর্ঘতম বাঘ প্রায় ১২ ফুট দীর্ঘ।এরপর ‘তালপট্টির সন্ত্রাস’ নামে খ্যাত বাঘ শিকার ছিল পচাব্দী গাজীর জীবনের ৫৭তম ও শেষ শিকার।৫৭টি রয়েল বেঙ্গল টাইগার শিকার করে তিনি সুন্দরবনের ইতিহাস হয়েছেন এবং শ্রেষ্ঠ শিকারির খেতাব নিয়ে ১৯৯৭ সালে মারা যান।


এই বিভাগের আরও খবর
এক ক্লিকে বিভাগের সবখবর
error: Content is protected !!
error: Content is protected !!