ইন্দোনেশিয়া ও প্রতিবেশী পূর্ব তিমুরে প্রবল মৌসুমি বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট বন্যা, ভূমিধস ও ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়ে প্রাণহানি বেড়ে ১৬০ জনে দাঁড়িয়েছে। এর বাইরে আরও কয়েক ডজনের নিখোঁজ। এছাড়া বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন হাজার হাজার মানুষ।
ইন্দোনেশিয়ার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, দেশের পূর্বাঞ্চলীয় দ্বীপ ইস্ট ফ্লোরসে বন্যা, ঘূর্ণিঝড় ও ভূমিধসে ১৩ জনের মৃত্যুর ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছে তারা। পূর্ব তিমুরের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আচমকা বন্যায় দেশজুড়ে প্রাণ হারিয়েছেন মোট ২৭ জন।
এদিকে ইন্দোনেশিয়া শতাধিক মানুষের মৃত্যু ছাড়াও কয়েকদিন ধরে ৭০ জন মানুষ নিখোঁজ। তাদের উদ্ধারে অভিযান চালাতে গিয়ে জটিলতার মুখে পড়েছে উদ্ধারকর্মীরা। ধ্বংসস্তুপ খুঁড়ে উদ্ধার কার্যক্রম চালাচ্ছেন। গত রবিবার ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড় সেরোজা আঘাত হানার পর থেকে নিখোঁজ এসব মানুষ।
বন্যা উপদ্রুত এলাকায় রাস্তা চলাচলের অনুপোযোগী, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন, বিরুপ আবহাওয়া এবং মূল কেন্দ্র থেকে দূরবর্তী হওয়ায় উদ্ধার কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। মুষলধারে বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধস ছাড়া ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর বাড়িঘর কাদা মাটির জমিতে পরিণত হয়েছে। উপড়ে গেছে গাছ। এর ফলে হাজার হাজার মানুষ অন্যত্র আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হাজার হাজার বাড়িঘর, পাশাপাশি হাসপাতাল ও সেতু ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে কিংবা ধ্বংস হয়েছে। বন্যা, ঘূর্ণিঝড় ও ভূমিধসের কারণে দশ হাজারের বেশি মানুষ বাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে পালিয়ে গেছে।
দেশটির জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র রাদিত্য জাতি বলেছেন, ‘মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এছাড়া আমরা আগামী আরও কয়েকদিন (ঘূর্ণিঝড় থেকে) এ রকম চরম আবহাওয়া দেখতে পাবো। কাদা এবং চরম আবহাওয়া একটি গুরুতর চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং ধ্বংসাবশেষের কারণে সৃষ্ট স্তূপ উদ্ধারকারী দলের অনুসন্ধানকাজকে বাঁধাগ্রস্ত করেছে।’
ইস্ট ফ্লোরসের দুর্যোগ প্রশমন সংস্থার প্রধান হাদা বেথান বলেছেন, ‘ধ্বংসস্তুপের নিচে অনেক মানুষ চাপা পড়েছে বলে আমরা শঙ্কা করছি এবং ঠিক কতজন নিখোঁজ রয়েছে তা আমাদের এখনো নিশ্চিত নয়।’
বর্ষাকালে ইন্দোনেশিয়ার দ্বীপগুলোতে বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনা হামেশাই ঘটে থাকে। গত জানুয়ারিতে বন্যায় ইন্দোনেশিয়ার জাভা প্রদেশের সুমেদাং শহরে ৪০ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি হয়েছিল।