সরকারে উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, চিকিৎসার অভাবে খালেদা জিয়ার কিছু হলে দেশের জনগণ আপনাদের রেহাই দেবে না। এ সময় তিনি সরকারি হাসপাতালে গেলে চিকিৎসা পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ করেছেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানবন্ধনে তিনি এ কথা বলেন। জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল এ মানববন্ধনের আয়োজন করে।
খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়া অনুমতিতে সরকারের প্রতিবন্ধকতার প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই সরকার দেশনেত্রীকে চিকিৎসার জন্য বাইরে যেতে দিতে চায় না। কেন? একবারও কি চিন্তা করেন না যে এই দেশের ১৬ কোটি মানুষ, আমার মা-বোনেরা রোজা রাখছে, দোয়া করছে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যেন সুস্থ হয়ে যায়। কেন আপনারা ভাবেন না যে এত কোটি কোটি মানুষের এই যে অভিশাপ আপনারা নিচ্ছেন এবং সেই অভিশাপ আপনাদেরকে নিঃসন্দেহে অভিশপ্ত করবে।’
‘আমি শুধু বলতে চাই, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বাইরে পাঠানো এই সরকারের জন্য দরকার। কারণ আল্লাহ না করুন তার যদি কোনো ক্ষতি হয় দেশের মানুষ আপনাদেরকে রেহাই দেবে না। অবিলম্বে আর কালবিলম্ব না করে দেশনেত্রীকে মুক্তি দিয়ে তার চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে প্রেরণ করুন। অন্যথায় আপনারা এর জন্য আপনারা সর্বাংশে দায়ী থাকবেন।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকারি হাসপাতালে গেলে কেউ চিকিৎসা পায় না, অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছেন, ব্যাংকগুলোকে লুটপাট করে শেষ করে দিয়েছেন। কথায় কথায় বলেন উন্নয়নের রোল মডেল নাকি বাংলাদেশ। মানুষ না খেয়ে রাস্তার পড়ে থাকে। আমাদের কৃষকেরা ধানের দাম পায় না, পণ্যের দাম পায় না, আমাদের শ্রমিক ভাইয়েরা তাদের মজুরি পায় না, আমাদের নিম্নবিত্ত আরো নিম্নবিত্ত হচ্ছে, মধ্যবিত্ত আরো নিম্নবিত্ত হচ্ছে। দারিদ্র্যের সীমা আরো অনেক নিচে নেমে গেছে।’
কিছু মানুষ ভুঁইফোড় হয়ে মোটাতাজা হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, জনগণের টাকা কেটে তারা লুটপাট করে ওই কানাডার বেগমপাড়ায় বাড়ি বানায়, মালয়েশিয়াতে সেকেন্ড হোম তৈরি করে অর্থাৎ টাকা পাচার করে দিচ্ছে। এই দেশ, এই রাষ্ট্রকে আজকে এমন এক অবস্থায় নিয়ে গেছে তারা।’
লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গত ১৩ নভেম্বর থেকে রাজধানীর বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে সিসিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন। হাসপাতালের মেডিকেল বোর্ড অবিলম্বে তাকে সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে উন্নত সেন্টারে নেয়ার সুপারিশ করেছে। এই সুপারিশের ভিত্তিতে খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার ইতোমধ্যে সরকারের কাছে আবেদন করেছেন। তবে সেই আবেদনের এখনো কোনো সুরাহা হয়নি।
মুক্তিযোদ্ধা দলের সহ-সভাপতি আবুল হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খানের পরিচালনায় মানববন্ধনে কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, শওকত মাহমুদ, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।