খোকা আর মা
বিবেকানন্দ মিস্ত্রী
সকাল বেলায় উঠেই খোকা
লাঙল কাঁধে নিয়ে,
মাঠের পানে ছুটে চলে
আলের পথ দিয়ে।
অনেক জমি আছে আজও
হয়নি তাতে চাষ,
ফসল বিনে কেমন ভাবে
চলবে বারো মাস ।
সারাদিন এই মাঠের কাজ
সন্ধ্যায় এসে ঘরে,
পাশে বসে মা আর ছেলে
দুইয়ে গল্প করে।
হঠাৎ ছেলের হাতটি ধরে
কেঁদে উঠলো মা,
বললো খোকা অভাবে তুই
পড়তে পারলি না।
পড়াশোনা করতে পারলে
অনেক বড়ো হতিস ,
কাজ করতে মাঠে নয়
অফিসেই যেতিস।
খোকা তখন মাকে বলে
শোন তোমায় বলি,
পড়াশোনা করলে আমি
বাইরে যেতাম চলি।
তখন তুমি কি করতে মা
একলা ঘরে হেথা,
শোন তোমায় বলি মাগো
নগেন কাকার কথা।
নগেন কাকার একটি ছেলে
ডাক্তার যেই হলো
চাকরি নিয়ে বিদেশ গিয়ে
আর ফিরে না এলো।
এবার নাকি আসবে ফিরে
কাকাও সাথে যাবে ,
শহরে কোন আশ্রম আছে
সেথায় কাকা রবে।
সেথায় নাকি কাকার মতন
আরও অনেক থাকে।
আমায় কাকা কেঁদে বলেন
দেখো তোমার মাকে।
কেমন আছেন এখন তিনি
তোমার কাছেই থাকে?
কষ্ট কভূ দিও না খোকা
তুমি তোমার মাকে।
মাকে রাখবো আমার কাছে
অত বড় নই,
মায়ের কাছে আছি আমি
মায়ের কাছে ই রই।
কথা শুনে নগেন কাকার
দুচোখ ভরে জলে,
দুহাতে সে জড়িয়ে আমায়
মিলাল তার গলে।
খানিক কেঁদে বলেন কাকা
সোনার ছেলে ওরে ,
তোমার মতো ছেলে হউক
পৃথিবীর সব ঘরে।