শ্যামনগর উপজেলার ১২ নং গাবুরা ইউনিয়নের ১০নং সোরা গ্রামের ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ আসা-যাওয়া করছে। সেতুটির মেয়াদ শেষ তবুও প্রতিদিন শত শত যানবাহন সেতুটির ওপর দিয়ে চলাচল করছে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে। যে কোনো সময় সেতুটি ভেঙে খালের উপর পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। বন্যার কারণে সেতুটি আরো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেছে। সেতুর খুঁটি থেকে ফাটল ও প্লাস্টার খসে খসে পড়ছে। ঝুঁকি পূর্ণ হয়ে পড়েছে সেতুটি।
সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সংস্কারের অভাবে সেতুটির মাঝখানে ফাটল সৃষ্টি হওয়ায় যান চলাচলে মারাত্মক ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়াও ব্রীজের দুই পাশের রেলিংগুলো ভেঙে পড়ে আছে। ফলে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই।
এ ঝুকিপূর্ণ ব্রীজ দিয়ে গ্রামের প্রায় হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। পাশাপাশি এই পথে কয়রা উপজেলার গোলখালী, ঘড়িলালসহ অনেক মানুষের যাতায়াত রয়েছে। পুরোনো ব্রীজ হওয়ায় অনেক দিন থেকেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে আছে। এর মধ্যে নতুন করে ব্রীজের মাঝখানে বড় আকারের একটি ফাঁটল সৃষ্টি হয়েছে। এতে ব্রীজটি আরো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
সোরা গ্রামের কামরুল গাইন বলেন, স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন যেকোনো সময় ব্রীজটি খালের মধ্যে ধ্বসে পড়তে পারে। ব্রীজটি দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে আছে। এর মাঝখানে বড় আকারের ফাটল এবং প্লাস্টার খসে খসে পড়ছে। এতে ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন মানুষ ও যানবাহন চলাচল করছে।
মটর সাইকেল চালক সাত্তার শেখ বলেন, ব্রীজটি অতিরিক্ত ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার কারণে গাড়ি নিয়ে ব্রীজের উপর উঠলেই বুকটা ধরপর করে কেঁপে ওঠে।এতে আমাদের মধ্যে ভয়-ভীতির সৃষ্টি হয়। এবং গাবুরায় কোন জায়গায় পিচের কার্পেটিং না থাকাই। কিছু ইটের সড়ক আছে তা প্রায় সব সড়কের ইট উঠে গিয়ে বৃষ্টির পানি জমে সেসব জায়গায় ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ডুমুরিয়া খেয়াঘাট ও হরিশখালীসহ খেয়াঘাট টু গাবুরা ইউনিয়ন পরিষদের সড়কের অবস্থা সবচেয়ে নাজুক অবস্থা।
আলহাজ্ব এম,এম মুনছুর আলী বলেন, এটি ইউনিয়ন পরিষদের অংশ হওয়ায় যেন দেখার কেউ নেই। সড়কের ইট গুলো উঠে গিয়ে বড় বড় গর্ত ও কাঁদা মাটি দেখা দিয়েছে। ফলে একটু বৃষ্টি হলে সেখানে পানি জমে যাচ্ছে রাস্তার এমন বেহাল দশা। এছাড়া গাবুরা অঞ্চলের সাথে উপজেলার সড়ক গুলোর যোগাযোগের ব্যবস্থা উন্নত না থাকায় উপজেলা সদরের অফিস আদালতে, স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা, হাসপাতাল ও ক্লিনিকে রোগী নিয়ে যাতায়াতে সময়ক্ষেপণ সহ ঝুঁকি নিয়ে আসা যাওয়া করতে হয়।
ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মাসুদুল আলম বলেন, গাবুরা ১০টি গ্রামের মানুষ এই সেতু দিয়ে শ্যামনগর উপজেলা যাতায়াত করে থাকেন। বিকল্প রাস্তা না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ পারাপার করছে সেতু দিয়ে। ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটির পাশে নতুন আরেকটি সেতু নির্মাণের বিষয়টি ইউনিয়নবাসীর দাবি। এ নিয়ে উপজেলায় মাসিক উন্নয়ন সভায় আলোচনা হয়েছে। কিন্তু অর্থ বরাদ্দ না থাকায় ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষে নতুন সেতু নির্মাণ করা সম্ভব নয়।
এ ব্যাপারে শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আ.ন.ম আবুজর গিফারী জানান, উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের সড়কগুলোর অধিকাংশ সংস্কার এবং অনেক নতুন সড়ক ও সেতু নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাকি যে সমস্ত সড়ক ও সেতুর বেহাল অবস্থা রয়েছে সেগুলোর কাজও করা হবে।