ডেস্ক রিপোর্ট : টাকা-পয়সা কোনো কিছুরই মূল্য নেই, করোনা দেখিয়ে দিলো- মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘একটা সময় দেখা যেত একটু থেকে আরেকটু হলেই চিকিৎসার জন্য বিদেশ চলে যেতো। কিন্তু করোনা বুঝিয়ে দিয়ে গেল টাকা-পয়সার কোনো মূল্য নেই। আর মনে হয় করোনাভাইরাস এসেছে মানুষকে শিক্ষা দিতে।’
করোনা ভ্যাকসিন পেতে সরকার আগাম টাকা দিয়ে রেখেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যখনই ভ্যাকসিন বাজারে আসবে আমরা পাবো।’
এ সময় শীতে করোনার দ্বিতীয় ধাক্কা সামলাতে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং মাস্ক পরে চলার আহ্বান জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনার আবার একটা ধাক্কা আসছে। সচেতন হলে কিন্তু সুস্থ থাকা যায়। মাস্ক পরতে হবে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে, এখন এর বিকল্প নেই। ভ্যাকসিন আসছে, তা নিয়ে নানা গবেষণা চলছে। আমরা আগাম টাকা দিয়ে রাখছি। যখনই বাজারে আসবে আমরাও পাবো।’
এ সময় বেশি করে খাদ্য উৎপাদনের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি করোনায় অর্থনীতির গতি ধরে ধরে রাখতে সরকারের নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘করোনাভাইরাস এসে সারা দুনিয়া স্থবির করে দিয়েছে। আমাদের দল, সরকার কিন্তু থেমে থাকেনি। জনগণের জন্য কাজ করে চলছি। অর্থনৈতিক কার্যক্রম সচলে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে প্রণোদনা দিয়েছি।’
“বিশ্বের অনেক উন্নত দেশ যেখানে করোনা সামলাতে হিমশিম খেয়েছে, সেখানে আমরা আমাদের অর্থনৈতিক কার্যক্রম একদিনের জন্যও থামতে দেইনি। অনেক উন্নত দেশের প্রবৃদ্ধি যেখানে মাইনাস গ্রেডে, সেখানে আমরা প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য হয়তো ধরে রাখতে পরিনি। কিন্তু পাঁচের ওপরে আমাদের প্রবৃদ্ধি থাকবে বলে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে।”
তিনি বলেন, ‘আমার করোনা মহামারিতে মৃত্যুর হার কম রাখতে সক্ষম হয়েছি। কারণ ঘাবড়ে না গিয়ে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছি। করোনা সংক্রমণ শুরুর পরই দুই হাজার ডাক্তার নিয়োগ করেছি, নার্স নিয়োগ দিয়েছি।’
সরকারের নানামুখি সমালোচনার জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা বলেন দেশে গণতন্ত্র নেই, তাদের কাছে আমার প্রশ্ন, জিয়া যখন হত্যা-ক্যু করে ক্ষমতা দখল করেছিল, ৯৬ সালে দ্বিতীয় বার যখন খালেদা জিয়া ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এলো, ২০০১ এ বিএনপি-জামায়াত জোট মেয়েদের ওপর যখন অমানবিক নির্যাতন করলো তখন কী গণতন্ত্র ছিল?’
বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘এখন তারা কী করে? ভোটে প্রার্থী দেয়, পরে ভোটের মাঝামাঝি সরে দাঁড়ায়। এটা তাদের প্ল্যান ‘বি’। তাদের উদ্দেশ্য নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা। তারা নির্বাচনের দিনে বাসে আগুন দেয়, আবার সংসদে দাঁড়িয়ে সরকারের সমালোচনা করে।’ বিএনপির মিথ্যাচার থেকে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে বাংলাদেশ অনেক আগেই উন্নত সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হতো বলে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা।
সম্পাদকমণ্ডলীর সভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, এসএম কামাল, মির্জা আজম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াসহ সম্পাদকমণ্ডলীর অন্যান্য সদস্যরা।