রাজশাহীর তানোর উপজেলার প্রতিটি আনাচে-কানাচে এবার আলুর চাষ হয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে। বিগত কয়েক বছর থেকে আলু চাষে ব্যাপক লাভ হওয়ায় এ বছর লক্ষ্য মাত্রা অনুযায়ী আলু চাষ অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি হয়েছে কিন্তু আশানুরূপ ফলন হলেও যথাযথ মূল্য না পাওয়ায় প্রায় কৃষকরা এবার আলু বিক্রির চেয়ে স্টোর জাত করতে আগ্রহী হয়ে পড়েছেন। সমস্যাটা সেখানেই যেখানে তানোরে মোট ৬টি কোল্ড স্টোর বা হিমাগার রয়েছে কিন্তু তাতে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে আরও অনেক বেশি আলু চাষ হওয়ায় স্টোর গুলোতে সাংকুলোন হচ্ছে না। বিধায় আলু নিয়ে চরম বিপাকে ও হতাশায় সহ অসহনীয় ক্ষতির আশংকায় আছেন কৃষকরা। তাছাড়া কৃষক মুখে শোনা যাচ্ছে অন্যান্য আশেপাশের উপজেলা থেকেও আলু ঢুকছে তানোরে।এমনকি কৃষকরা অভিযোগ করে বলছেন যে,স্টোর মালিক, ম্যানেজার ও তাদের সিন্ডিকেটের কারনে আমারা স্টোরে ঠিক মত,সময় মত ও প্রয়োজন মত আলু ঢুকাতে পারছি না। তার কারণ হলো কৃষকরা তাদের লক্ষ্য অনুযায়ী পেইড, লুজ ও কন্টাক বুকিং করলেও স্টোর মালিক পক্ষ বলছেন, যাদের ১০ হাজার বুকিং আছে তারা ৫ হাজার, যাদের ৫ হাজার বুকিং আছে তারা আড়াই হাজার, যাদের ২হাজার বুকিং আছে তারা ১ হাজার এবং যাদের ১হাজার বুকিং করা আছে তারা ৫ শত ব্যাগ আলু রাখতে পারবে। এখন ভুক্তভোগী কৃষকের প্রশ্ন হলো, আলু বুকিং করার সময় মালিক পক্ষ আগে কেন এসব কথা বলেন নি ? আর এটা কোন আইনে আছে যে ফুল টাকা দিয়ে বুকিং করে আলু সংরক্ষণের সময় অর্ধেক বুকিংয়ে আলু রাখতে হবে ? কৃষকেরা আরো বলছেন স্টোর মালিকদের এসব বেখেয়ালিপনা ও আত্মীয়করণ,সিন্ডিকেট ও দূর্নীতির কারণে আমাদের আজ এই অবস্থা,আমরা এখন না পারছি আলু গিলতে, না পারছি ফেলতে। অর্থাৎ বর্তমানে আলুর দাম কম হওয়ায় কৃষকেরা আলু বিক্রির চেয়ে স্টোরজাত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে ,আর সেই সাথে স্টোর মালিকদের বিভিন্ন টালবাহানা তো আছেই। উল্লেখ্য যে আলুর দাম কম ও স্টোর জাত করতে না পারায় কাশিম বাজারস্থ রায়তান আকচা গ্রামের আব্দুল মালেক নামের এক আলু চাষী গত ১৯ মার্চ স্ট্রোক করে রামেক হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এঅবস্থা থেকে কৃষকদের উত্তরণের উপায় কি? কথায় আছে “কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে ” তাই তানোর উপজেলা নির্বাহী প্রশাসনের কাছে কৃষকদের নিবেদন,আলু সুষ্ঠু ভাবে স্টোরে সংরক্ষণের জন্য প্রশাসনের সু দৃষ্টি কামনা ও সহযোগিতা প্রয়োজন। এছাড়া বর্তমানে তানোরের ব্যস্ত রাস্তা গুলোতে আলু বহন করতে গিয়ে যে সমস্ত যানজট তৈরি হচ্ছে বিশেষ করে তানোর টু চান্দুড়িয়া,তানোর টু মুন্ডুমালা ও তানোর টু চৌবাড়িয়া রোডে যানজট নিরসনের জন্য পুলিশ প্রশাসন,ট্রাফিক পুলিশ আনসার সদস্য,গ্রাম পুলিশ সহ সকলকে কাজে লাগিয়ে আলু সংরক্ষণের জন্য প্রশাসনের নিকট সহযোগিতা চেয়েছেন কৃষকরা।