লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে আইডিয়াল ল্যাবরেটরি স্কুলের রি-ইউনিয়নের তুচ্ছ ঘটনার জেরে জুলাই যোদ্ধা আল মাহমুদ ওমর ও আইমান তাকিবের উপর ছাত্রলীগ ট্যাগ বসিয়ে পুর্ব পরিকল্পিত হামলা চালানো হয়।
গত কিছু দিন পুর্বে ঈদুল আযহার তৃতীয় দিন হাজিরহাট বাজার তাল্পট্রি রোডে অবস্থিত আইডিয়াল ল্যাবরেটরি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের রি-ইউনিয়ন অনুষ্ঠিত হয়। আইয়ুব আলী যে কোন সময় ওমর এবং আইমান এর সামনে আসলেই সিনিয়র হিসেবে কেন চেয়ার থেকে উঠে সালাম দেয়না এ নিয়ে বিভিন্ন সময় উভয়ের মধ্যে বিতর্ক হয়। মুলত এখান থেকেই ঘটনার সুত্রপাত। ঈদের তৃতীয় দিন ০৯ তারিখ স্কুলের রি-ইউনিয়নের অনুষ্ঠান নিয়ে ছাত্র-শিক্ষকদের মাঝে ভুল বুঝাবুঝিতে সোস্যাল মিডিয়ায় লেখালেখি হয়।। একই দিন সোস্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আইয়ুব আলী সহ কয়েকজন বলে সেয়ার করা পোস্ট ডিলেট না করলে সময় মতো হাত-পা গুড়িয়ে দিবে বলে আল মাহমুদ ওমরকে হুমকি দেয়।
এই ঘটনার জেরে গত ০৫/০৭/২৫ ইং মঙ্গলবার জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে আয়োজিত মিছিল শেষে জামাতের হাজিরহাট বাজার সভাপতি আয়ুব আলী বিক্রমপুর ক্রোকারিজ এর সামনে জুলাই যোদ্ধা আল মাহমুদ ওমর ও আইমান তাকিবের ব্যাক্তিগত কথাকে নিজের গায়ে টেনে নিয়ে তাদেরকে ডেকে কোন প্রকার কথা ছাড়াই প্রথমে ওমরকে স্ব-জোরে ঘুষি মারে তাকে থামাতে গেলে আইমনকেও ঘুষি মারে। এ নিয়ে তিনজনের মধ্যে হাতা হাতি হলে উপস্থিত লোকজন এসে ছাড়িয়ে দেয়। ঘটনার ৫/৬ মিনিট পর বাসার উদ্দ্যেশ্যে ওমর ও আইমান চলে যাওয়ার সময় সিটি বেকারির সামনে আসলেই হাওলাদার ডেন্টাল কেয়ারের ইউনুস এবং তার ভাই আয়ুব আলীর নেতৃত্বে ১০/১৫ জনের সঙ্গবদ্ধ গ্রুপ মিলে দুজনের উপর অতর্কিত হামলা করে দফায় দফায় মারধর করে জায়েদ টেলিমিডিয়া নামীয় একটি ঘরের ভিতরে আটকায় যার ভিডিও চিত্র সোস্যাল মিডিয়ায় আলোচিত। ঘরের ভিতরে রেখে ইউনুস ও আয়ুব আলী সহকর্মীদের নিয়ে ২/৩ বার আইমানের কণ্ঠনালী চেপে ধরে এবং আল মাহমুদ ওমরকে ধারালো ব্লেট দিয়ে গলা কাটতে গেলে ওমর পেছনে সরে গেলে বুকের মধ্যে কেটে যায়।
ঘটনাটি অনেক দূর গড়িয়ে গেলে সামলাতে না পেরে জামায়েতকে জড়িয়ে সন্ত্রাসী হামলার অজুহাতে তাদের দুজনের উপর ছাত্রলীগ ট্যাগ বসিয়ে থানায় হস্তান্তর করা হয়।।
উল্লেখ্য হামলার সিকার হওয়া দুইজনের মধ্যে আল মাহমুদ ওমর স্থানীয় বাজারের হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক, সিনিয়র সাংবাদিক,উপজেলা প্রেস ক্লাব এর সভাপতি এবং অত্র অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী জগবন্ধু মাতাব্বর পরিবারের সদস্য আনোয়ার হোসেন মাতাব্বর এর বড় ছেলে এবং আইমান তাকিব উপজেলা মহিলা জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি উম্মেকুলছুম ও ডা:মাহমুদ এর ছোট ছেলে।
এদিকে আইমান তাকিবের মা সাবেক মহিলা জামায়াতে সেক্রেটারি উম্মে কুলছুম বলেন, আমি গত ১৮বছর থেকে মহিলা জামায়াতের রাজনীতির সাথে জড়িত। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় প্রায় এক বছর জেল খেটেছি। যে দলের জন্য বহু ত্যাগ স্বীকার করেছি। ওই দল এখন আমার ছেলেকে ছাত্রলীগ বানিয়ে পুলিশে দেয়। এছাড়াও রাতভর অনেক নাটকের পর আমি যেন এ বিষয়ে কোন বাড়াবাড়ি করতে না পারি তার জন্য মুচলেকা নিয়ে আমার ছেলেকে মুক্তি দেয়।
এ বিষয়ে উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা আবুল খায়ের বিভিন্ন পত্রিকা সাংবাদিকদের সাক্ষাৎকারে বলেন, দু’পক্ষই আমাদের লোক। পূর্বের তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে সামান্য ঝামেলা হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে আমরা পুলিশের সহযোগিতা নিয়েছি। আর এ বিষয়টি আমরা বসে সমাধান করার চেষ্টা করছি। যার পুরোটাই ভিন্ন চিত্র। আইমান তাকিব ছাত্র শিবির করতো কিন্তু এখন সংগঠন থেকে বিরত আছে। এ ছাড়া আল মাহমুদ ওমর জুলাই আন্দোলন ছাড়া কোন সংগঠনের সাথেই যুক্ত ছিলোনা।
কমলমগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, জামায়াতের মিছিল শেষে দু’পক্ষের মারামারির ঘটনায় পরিস্থিতি সামাল দিতে দুই জন কে আটক করা হয়। পরে রাতেই জামায়াতের লোকজন এসে তাদের ছাড়িয়ে নেয়।