রাজশাহীর কোচিং বাণিজ্য লাগামহীন অর্থ আদায়ে সোচ্চার বৃহৎর রাজশাহী জেলা ও মহানগর অবিভাবকবৃন্দ।
রাজশাহী শহরের কোচিং সেন্টারগুলো পড়াশুনা আদায় না করে তারা মুনাফা কেন্দ্রীক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ছাত্র/ছাত্রীদের ধরে রাখে। কোচিংয়ে সকল ছাত্র/ ছাত্রীদের প্রতি সুনজর না থাকায় শিক্ষার মান থাকছে না পক্ষান্তরে অভিভাবকবৃন্দের কষ্টার্জিত অর্থব্যায়ের কাঙ্খিত ফল আসছে না। রাজশাহী শহরের সকল ছাত্র/ছাত্রীদের অনুচরসংগীর মত কথা প্রচলিত হয়েছে ভাইয়াদের কাছে পড়তে হবে,তাতে সমস্যা নাই তবে সঠিক সেবা পাওয়া যাচ্ছে না। আনুষঙ্গিক সকল কর্মকান্ড বিদ্যমান থাকলেও এর সুফল সবাই পাইনা। একই ক্লাসে ৫০ থেকে ২০০ জনের উপস্থিতিতে যে ক্লাস সেটি কোচিং ক্লাস বা প্রাইভেট ক্লাস কোনটিই বুঝায় না। প্রাইভেট ক্লাস ১৫ থেকে ২০ জন হতে পারে প্রতি ব্যাচে।অনেক অভিভাবকগণ কোচিং সেন্টারে সঠিক সেবা পাচ্ছিনা আবার কোর্স ফি বাড়িয়ে দিচ্ছে সেটি একটি কথা, আবার ৩ মাস আগে অগ্রিম কোর্স ফির ১২ মাসের টাকা নিয়ে ৮ মাস পড়ানো যা যুক্তি সংগত নয়। কোর্স ফি বাতিল করে মাসিক সহনশীল ফি নির্ধারন করার জন্য জোর আবেদন করছেন নগরবাসী ।
আবার দেখা যাচ্ছে প্রতি ক্লাসে ১৫ থেকে ২০ জনের ব্যাচ হওয়া কাম্য। ছেলে মেয়েরা স্কুলের পরিবর্তে ভাইয়াদের কাছে অনুচরসংগীর মত পড়তে আগ্রহী হওয়ায় শিক্ষার্থীরা বিপদগ্রস্থ। কোচিং-শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভিতরে/বাইরে যে কোন শিক্ষক/ভাইয়া দ্বারা কোন স্থানে পাঠদান করাকে কোচিং বুঝায়।
রাজশাহী জেলার প্রাইভেট কোচিং সেন্টার ও ভাইয়া গ্রুপের অনিয়ম সেচ্ছাচারিতার বিপক্ষে সহনশীল পড়াশোনার মান বিদ্যমান রাখার লক্ষ্যে আগামী ১৭ নভেম্বর সোমবার বিকাল সাড়ে পাঁচটার সময় রাজশাহী কলেজে শিক্ষক মিলনায়তনে মতবিনিময়ের আয়োজন করেছে শিক্ষা সুরক্ষা কমিটি রাজশাহী(প্রস্তাবিত) তাঁরা
মহানগরীতে কোচিং বাণিজ্যের লাগামটেনে ধরতে অভিভাবকদের স্বার্থে সার্বিক অবস্থা নিয়ম-নীতির মধ্যে আসতে হবে।
কোচিং নীতিমালার ১১টি রুপচিত্র তুলে ধরা হলোঃ
(১)অগ্রীম কোর্স ফি বাতিল করে মাসিক বেতন নির্ধারণ করা (যা মাসের শুরুতে ১ হতে ৭ তারিখে পরিশোধ যোগ্য)।
(২) প্রতি ব্যাচে আসন সংখ্যা নির্ধারণ (জাতীয় মডেল অনুসরণ করে)।
(৩) বার্ষিক পরীক্ষার পূর্বে ভর্তি কার্যক্রম থেকে বিরত থাকা।
(৪) প্রতি ব্যাচের সকল ছাত্র-ছাত্রীদের নিকট হতে ক্লাসে পড়া ধরা এবং আদায় করে নেওয়া।
(৫) টাকার জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে খারাপ ব্যবহার ও ক্লাস থেকে বের করে দেওয়া পরিহার করা।
(৬) কোর্স ফি নামে ৩ মাস আগে টাকা নেওয়া মুলত ৯ মাস আগাম টাকা গ্রহণ বুঝায়, সেটি বন্ধ করা।
(৭) ছাত্র-ছাত্রীদের বসার জন্য যে বেঞ্চ ব্যবহার করা হয় তা এত কাছে বা স্পেস কম যা সবার বসার জন্য উপযোগী নয় বা কষ্টকর। বেঞ্চগুলো একটির সাথে আরেকটি লাগানো থাকে, সরনো যায়না।
(৮)একটি অধ্যায় শেষ না করে টাইম পাস মুলক পরীক্ষা, যেটি অধ্যায় শেষ করে কয়েকটা পরীক্ষা নেওয়া উচিৎ।
(৯)ছাত্র-ছাত্রীরা দাঁড়িয়ে প্রশ্ন করলে নানাভাবে বকা দেওয়া। ক্লাসে কারো প্রশ্ন করার সুযোগ নাই।
(১০) অগ্রিম টাকা নেওয়ায় ষান্মাসিক ও বার্ষিক কোর্স সঠিকভাবে সমাপ্ত করেনা। (১১)পারিবারিক গল্প শুনা, শিক্ষকের গল্প বলে সময় শেষ করা।
অভিভাবকগণরা বলেন, অপেক্ষাকৃত বেসরকারি স্কুলের বাচ্চাদের ভর্তি করান না কারণ তারা কম মেধাবি, তাদের বুঝাতে সময় বেশী লাগবে বলে। ভাইয়ারা শুধু টাকা উপার্জনই মূল লক্ষ্য মনে করে মানহীন পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছে।
এটি মূলত ব্যবসা কেন্দ্রীক প্রাইভেট ক্লাস। কোচিং বাণিজ্য বিগত সময়ে অভিভাবকগণের দায়ের করা রিট পিটিশনের (৭৩৬৬/২০১১) রায়ের প্রক্ষিতে ২০১২ সালের ২০ জুন (২০-০৬-২০১২) এক আদেশ জারি হয় কোচিং সেন্টার বন্ধে গেজেট নোটিফিকেশন যা অন্য কোনরূপ আদেশ প্রদানের নির্দেশনা রয়েছে। যা ৯ নং ধারায় কোচিং সেন্টারের নামে বাসা ভাড়া/ নিজ বাড়িতে কোচিং বাণিজ্য পরিচালনা করা যাবেনা। তবে নিজ বাড়িতে অনধিক ১০ এজন ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে প্রাইভেট পড়ানো যাবে। আবার অনুমোদিত ডাবে কোচিং এ সর্ব্বোচ্চ এক ব্যাচে ৪০ জন ছাত্র-ছাত্রী থাকতে পারবে। অভিভাবকগণ সেটি লক্ষ্য করছি না।
সকল কর্মকান্ড বিদ্যমান থাকলেও এর সুফল সবাই পাচ্ছেন। এই কোচিং বাণিজ্য বন্ধে জেলা প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মাধ্যমে আমরা প্রতিকার চাই।