মাগুরায় দলিল জালিয়াতি ও প্রতারণার প্রতিবাদে মানববন্ধন
মাগুরা জেলার মহম্মদপুর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নে ভুয়া দলিলের মাধ্যমে জমি দখলের অভিযোগ এনে এক মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে রাজাপুর বাজার কামারবাড়ি মোড়ে হিন্দু-মুসলিম ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকার সর্বস্তরের মানুষ এ মানববন্ধনে অংশ নেন।
অভিযোগকারীরা জানান, রাজাপুর, রাজপাট ও গবরনাদা গ্রামের বহু পরিবারকে উৎখাতের চেষ্টা করছেন আবুল কালাম নামের এক ব্যক্তি। তারা দাবি করেন, আবুল কালাম প্রথমে তার মা রওশনআরা’র নামে ভুয়া দলিল তৈরি করেন এবং পরবর্তীতে ২০২৫ সালে হেবা দলিলের মাধ্যমে জমিগুলো নিজের নামে স্থানান্তর করেন।
ভুক্তভোগী নিতাই সরকার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমার কাছে সমস্ত কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও কিভাবে আবুল কালাম আমার জমি দখলের চেষ্টা করছে—এটি একেবারেই অযৌক্তিক।”
আরেক ভুক্তভোগী মো. হুসাইন খান অভিযোগ করে বলেন, “তিনি তার মায়ের নামে মিথ্যা দলিল বানিয়ে এখন নিজের নামে করে বিক্রির চেষ্টা করছেন। বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করা প্রয়োজন।”
স্থানীয় হাবিবুর রহমান সোহাগ জানান, “১৯৬৮ সাল থেকে আজ পর্যন্ত তারা এ জমিতে কোনো দাবি তোলেননি। হঠাৎ করে এত বছর পর দাবি তোলা প্রতারণা ছাড়া কিছু নয়।”
মানববন্ধনে বক্তারা আরও অভিযোগ করেন, এসব জমিতে বসতবাড়ি ছাড়াও রয়েছে কৃষিজমি ও বাগান। বহু পরিবার দীর্ঘদিন ধরে এখানে বসবাস ও চাষাবাদ করে আসছে। তারা প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান—আবুল কালামকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
কৃষ্ণ গোপাল সাহা বলেন, “পূর্বপুরুষ থেকে আমরা এই জমি ব্যবহার করে আসছি। আমার বাবা অজিত কুমার সাহা স্বাক্ষরের মাধ্যমে দলিল সম্পাদন করতেন। অথচ এখানে অজিত সরকার নাম ব্যবহার করে টিপসই দেওয়া ভুয়া দলিল বের করে আনা হয়েছে। অথচ এতদিন তারা কোনো দাবিও করেনি।”
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আবুল কালাম বলেন, “আমি সেনাবাহিনী থেকে তিন বছর আগে অবসর নিয়েছি। গ্রামের রাজনীতির এসব খেলা আমি বুঝি না। জমি যদি আমাদের না হয়, তাহলে আমাদের নামে খাজনা আদায় হচ্ছে কিভাবে? ভুক্তভোগীরা চাইলে আদালতে যাক, দেশে আইন আছে। বরং উল্টো তারা আমাকে ও আমার মাকে হুমকি দিচ্ছে।”
তিনি আরও দাবি করেন, ৬৮ সালে আমার মায়ের বয়স ১০ বছর ছিল—এই অভিযোগ মিথ্যা। তখন তার বয়স ছিল ১৮ থেকে ২০ বছর। তারা গ্রামের লোকজনকে ভোজ খাইয়ে আমার বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাচ্ছে।”